মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পরই চরম হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সোমবারই মায়ানমারের নেত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর (প্রধানমন্ত্রী সমতূল্য) আং সান সু কি-কে গৃহবন্দি করে সে দেশের সেনাবাহিনী। ক্ষমতাসীন নির্বাচিত সরকারকে এক বছরের জন্য বরখাস্ত করে সেনাবাহিনী। যার ফলে গোটা বিশ্বে নিন্দার ঝড়। সুর চড়িয়েছেন বাইডেনও।
মায়ানমারের গণতন্ত্রের উপর এই সেনা অভ্যুত্থান আঘাত হেনেছে বলে তীব্র নিন্দা করেছেন বাইডেন। সেইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা জারি করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এর আগে মায়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর গত দশকে যা যা ঘটনা ঘটেছে তার উপর ভিত্তি করে নিষেধাজ্ঞা করার কথা ঘোষণা করেছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, যখনই গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানা হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
গত কয়েক বছর ধরে ক্ষমতাসীন সরকারের উপর চাপ বজায় রাখছিল সেনাবাহিনী। সরকারকে হাতের পুতুল করে রাখার চেষ্টা করে সেনা। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হওয়ার পর সু কি-র উপর আস্থা হারিয়ে সেনা অভ্যুত্থান করে বাহিনী। ১৯৬২ সালের পর সামরিক শাসন জারি হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে হয়ে যায় মায়ানমার। তারপর ধীরে ধীরে সু কি-র নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফেরে মায়ানমারে। ১৯৯১ সাল নোবেল শান্তি পুরস্কার পান সু কি। কিন্তু সু কি-কে বন্দি করার ঘটনায় গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত। এর আগেও দীর্ঘদিন গৃহবন্দি দশায় ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ক্ষমতায় আসার তিনি স্টেট কাউন্সিলর নির্বাচত হন। যা প্রধানমন্ত্রী পদের সমতূল্য। কিন্তু তাঁর হাতে পুরো ক্ষমতা কখনওই হস্তান্তর করেনি সেনা।
আরও পড়ুন সেনার দখলে মায়ানমার, বন্দি সুকি
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং গণহত্যার অভিযোগ ওঠে সু কি সরকারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মহলে ধাক্কা খায় সু কি-র ভাবমূর্তি। পরে গত বছর নভেম্বরে ভোটে কারচুপি ঘিরেও অভিযোগের তির ছিল এই নেত্রীর বিরুদ্ধে। মায়ানমারের নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগ নস্যাৎ করলেও সু কি সরকারের সঙ্গে এই নিয়েই সেনার বিরোধ চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কা সত্যি করে মায়ানমারে ফের সেনা অভ্যুত্থান ঘটল।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন