পাকিস্তানে রক্তাক্ত শিক্ষাঙ্গণ। বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল করাচি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। মঙ্গলবার এখানে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্ততপক্ষে চার জন। আহত আরও বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে করাচি প্রশাসন।
পাকিস্তানে মোহাজিরদের ঘাঁটি বলেই বন্দর শহর করাচি পরিচিত। অতীতে এখানে হামেশাই দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে থাকত। মঙ্গলবার এখানকার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি পণ্যবাহী গাড়িতে আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে। আচমকা বিস্ফোরণে দিশাহারা হয়ে পড়েন লোকজন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে দু'জন আবার বিদেশি নাগরিক। তারাই হামলাকারীদের লক্ষ্য ছিল। নাকি, অন্য কোনও কারণে এই বিস্ফোরণ তা এখনও স্পষ্ট নয় প্রশাসনের কাছে।
নিহতরা চিনের নাগরিক বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে গাড়িতে বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সেটি দাঁড়িয়ে ছিল করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কাছেই। এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চিনের পড়ুয়াদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রয়েছে। ঘটনার সময় ভ্যানটিতে বেশ কয়েকজন অধ্যাপক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর পর তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। সংখ্যাটা অন্তত সাত থেকে আট জন হবে বলেই মনে করছে করাচি পুলিশ।
ইমরান খান সরকারে থাকাকালীন, বালুচিস্তান ছাড়া বাকি পাকিস্তান মোটের ওপর শান্তই ছিল। কিন্তু, শেহবাজ শরিফ ক্ষমতায় ফিরতেই ফের প্রশাসনিক ব্যর্থতা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। আবার, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্ফোরণের পর এমনই অভিযোগ করেছে পাকিস্তানের বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান-তেহরিক-ই-ইনসাফ। তাঁদের অভিযোগ, করাচির পাশাপাশি ওয়াজিরিস্তানেও শুরু হয়েছে হামলা। আফগান জঙ্গিরা পাকিস্তান সেনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো শুরু করেছে। তবে, তেহরিক-ই-ইনসাফ যাই বলুক না-কেন, এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দল হামলার দায় স্বীকার করেনি।
তবে, প্রাথমিক ভাবে হামলার পিছনে কোনও মোহাজির জঙ্গি সংগঠনের হাত থাকতে পারে বলেই মনে করছে প্রশাসন। পাশাপাশি, চিনের নাগরিকদের ওপর পাকিস্তানের জনতার অনেকেই বর্তমানে ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে পাকিস্তানের বর্তমান বেহাল আর্থিক দশার জন্য সেদেশের অনেকেই চিনের নাগরিকদেরই দায়ী করছে। সেই রোষ থেকেও কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপকদের ওপর হামলা চালানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না করাচি পুলিশ।
Read in English