রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেই গোদের উপর বিষফোড়ার মতো আর্থিক সঙ্কটে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হওয়ার দিকে এগোচ্ছে ভারতের পড়সি দেশ। কোষাগারের পরিস্থিতি এমন যে বিদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস বা কয়লা আমদানি করতে পারছে না পাকিস্তান। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় গৃহস্থালি এবং শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুই ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি-গ্যাস এবং কয়লার দাম গত মাসে রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ বাজার থেকে গ্যাস-জ্বালানি কিনতে পারছে না। শক্তি উৎপাদনের পিছনে পাকিস্তানের গত এক বছরে ১৫০০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আর্থিক সঙ্কটের জেরে ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা দেশের।
তার মধ্যেই কিছুদিন আগে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। নয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফ। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল একটি টুইট করে জানিয়েছেন, গত ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হয়েছে। একই পরিমাণ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে যান্ত্রিক সমস্যার জন্য। করাচির আরিফ হাবিব লিমিটেডের প্রধান তাহির আব্বাস জানিয়েছেন, সারা দেশে মোট যতটা বিদ্যুতের প্রয়োজন তার এক-পঞ্চমাংশ এই বিদ্যুকেন্দ্র গুলি জোগান দিত।
আরও পড়ুন সীমান্তপার থেকে জঙ্গি এনে আশ্রয়দানের অভিযোগ, জইশ কমান্ডারকে জঙ্গি তকমা কেন্দ্রের
পাকিস্তানে সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেহবাদ শরিফের কাছে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেশের আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা করা। বিদ্যুৎ সঙ্কট তার মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের অপেক্ষাকৃত গরিব দেশ পাকিস্তানের নিজস্ব জ্বালানির উৎস নেই। তাই বিশ্ববাজারের উপর নির্ভরশীল পাকিস্তান। আমদানিতেই কোষাগারের অনেকটা খরচ হয়। তার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে।
এদিকে, গত কয়েক মাসে পাকিস্তানকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারীরা বহু রফতানি বাতিল করেছে। রবিবার স্পট মার্কেট থেকে ৬টি এলএনজি কার্গো আমদানি করার জন্য দরপত্র প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। তার জন্য কয়েক লক্ষ ডলার খরচ পড়বে। সেই আর্থিক ধাক্কা কি সামাল জিতে পারবে পাকিস্তান?