রুশ হামলার বীভত্সতা থেকে রেহাই পেল না হাসপাতাল। রেহাই পেল না দুধের শিশুরাও। ইউক্রেনের মারিউপোলে রাশিয়ার বিমানহানায় ধ্বংসস্তূপে বদলে গেল আস্ত একটা হাসপাতাল। যেখানে প্রসূতি এবং শিশুরা ভর্তি ছিলেন। আর, সেখানে বহু শিশুর চিকিৎসাও চলছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে, বলতে পারছে না ইউক্রেন প্রশাসন।
শুধুমাত্র মারিউপোল শহরের আধিকারিকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও শেয়ার করেছেন। যেখানে নিটোল বহুতলের একাংশের নির্মীয়মাণস্তরে পৌঁছে যাওয়ার ছবি ধরা পড়েছে। বাকি অংশ মিশে গিয়েছে ধূলিকণায়। ইউক্রেন প্রশাসনের দাবি, রুশ বাহিনী ওই হাসপাতালের ওপর বেশ কয়েকটি ভারী বোমা নিক্ষেপ করেছে। যার ফলে এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।
এই ভিডিও প্রকাশের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। তিনি টুইট করেছেন, 'রাশিয়ার সেনা এক প্রসূতি হাসপাতালের ওপর সরাসরি হামলা চালিয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শিশু-সহ চিকিত্সক, স্বাস্থ্যকর্মীরা সকলেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়েছেন। নৃশংসতা! উপেক্ষা করার মধ্যে দিয়ে বিশ্ব কতদিন এই সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেবে! এখনই আকাশসীমা বন্ধ করুন! হত্যালীলা বন্ধ করুন! আপনাদের সেই ক্ষমতা আছে। কিন্তু, আপনারা মানবতা হারিয়ে ফেলেছেন।'
এর আগেও কিছুদিন আগে রুশ সেনার বিরুদ্ধে এক প্রসূতি হাসপাতালে বোমাবর্ষণের অভিযোগ এনেছিল ইউক্রেন। সেই সময় যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করেছিল রাশিয়া। বুধবারও ফের তাদের বিরুদ্ধে ওঠা প্রসূতি হাসপাতাল ধ্বংসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মস্কো। রুশ প্রশাসনের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা কেবল বেছে বেছে ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতেই হামলা চালাচ্ছে। যদিও, সাধারণ ইউক্রেনবাসীরা অভিযোগ, রাশিয়ার বিমান বাহিনীর বোমা হামেশাই জনবহুল এলাকায় এসে পড়ছে। তাতে অসংখ্য সাধারণ মানুষের মৃত্যুও হচ্ছে।
শুধু ইউক্রেন প্রশাসনই নয়। ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়রাও বিভিন্ন জনবহুল স্থানে রুশ সেনার হামলার সাক্ষী হয়েছেন। তাঁদের চোখের সামনেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার বিমান থেকে ছোড়া গোলা। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সেনার হামলায় এক ভারতীয় পড়ুয়াও ইউক্রেনে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ডের জেরে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানবতা ভঙ্গের অভিযোগকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। সেই আগুনে ঘি ঢালল বুধবার মারিউপোলে প্রসূতি হাসপাতাল ধ্বংসের অভিযোগ।