বিজ্ঞানীদের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। বারবার করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার 'হু'-এর কর্তারা বলছিলেন, করোনা যায়নি। নতুন করে ফিরে আসতে পারে। আরও ক্ষতিকারক চেহারায় ফিরতে পারে। তাই আগে থেকেই সাবধান হতেও বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিশ্বজুড়ে করোনার প্রভাব অনেকটাই কমে যাওয়ায়, সেই সাবধানবাণী নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের সাবধানবাণীই সত্যি হল। ফিরে এল করোনা। আর, তা ফিরল যেখান থেকে গোটা বিশ্বে করোনা ছড়িয়েছিল, সেই চিন দেশে। যার জেরে শেষ পর্যন্ত বেশ কিছু শহরে লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছে চিন। প্রতিবেশী দেশটির বিভিন্ন শহরে জারি হয়েছে চূড়ান্ত করোনাবিধিও। অফলাইন স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে গণহারে করোনার নমুনা পরীক্ষার ওপর।
দু'বছর আগে চিনে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এবার নতুন করে ব্যাপকহারে সংক্রমণ ছড়ানো শুরু করেছে। শুধুমাত্র শনিবারই চিনে ১,৫০০-র বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন! সাম্প্রতিক অতীতে চিনে একদিনে এত বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হননি। যখন গোটা বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে, সেই সময় চিনের দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ৫৮৮। কিন্তু, এখন যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে সংক্রমণ রোখা কঠিন হয়ে পড়ছে বলেই মনে করছেন চিনের স্বাস্থ্যকর্তারা। এই পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে ইতিমধ্যেই 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছে বেজিং।
যার নমুনা হিসেবে উত্তর-পশ্চিমের জিলিন প্রদেশে চ্যাং চুঙ-সহ বিভিন্ন জায়গায় বাসিন্দাদের একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সব নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সাংহাইয়ে ডিজনিল্যান্ড রিসর্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা আগের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট লাগবে। না-হলে রিসর্টে প্রবেশ নিষিদ্ধ। চিনের সবচেয়ে পুরনো ক্যান্টন এলাকার বাণিজ্যমেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- উপমহাদেশেও যুদ্ধের মেঘ! ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়া খোলামনে নিচ্ছে না, জানাল পাকিস্তান
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে, বাসিন্দারা যাতে নিজেরাই করোনা পরীক্ষা করতে পারেন, এজন্য পাঁচ ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করতে স্থানীয় সংস্থাগুলোকে অনুমতি দিয়েছে বেজিং। ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের সময় এই ধরনের করোনা পরীক্ষার যন্ত্রপাতি কাজে লাগানো হয়েছিল। এবারও সেই চেনা পথেই হাঁটছে বেজিং। যাতে বাসিন্দারা নিজেরাই পরীক্ষা করে নিতে পারেন। আর, তাঁদের থেকে আর কারও যাতে করোনা সংক্রমণ না-ছড়ায়।
Read story in English