দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নতুন করে ভাইরাসের দাপট দেখা দিলেও ভারতে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে সংক্রমণ। সেই কারণেই আগামী ৩১ মার্চের পর থেকে কোভিড সংক্রান্ত প্রায় সব বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। শনিবার মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে হয়েছে ১ হাজার ৬৬০ জন। সেই সঙ্গে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৪১। রবিবার থেকেই শুরু আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা। ভারতের এই নিম্ন সংক্রমণ হার কিছুটা স্বস্তি দিলেও বিশ্বের পরিসংখ্যান কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলতে বাধ্য।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এর আগে জানিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী টানা দু’সপ্তাহে নতুন করোনভাইরাস সংক্রমণ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এসবের মাঝে চিনের পরিস্থিতি রীতিমত উদ্বেগের। ওমিক্রনের নতুন প্রজাতির দাপটে নাজেহাল চিন। শুক্রবারই, চিনের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা পরিস্থিতিটিকে "গুরুতর এবং জটিল" বলে অভিহিত করেছেন। নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বাড়ছে উদ্বেগ।
গত শুক্রবার সেদেশে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১২৮০ জন। চিনের ২০টিরও বেশি প্রদেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে হংকংয়ে ১ মার্চ থেকে ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা সূত্রে পাওয়া খবর অনুসারে দেশের একটা বড় অংশের মানুষ এখনও করোনা টিকা পাননি। টিকাহীন মানুষদের মধ্যে অধিকাংশই বয়স্ক।
এদিকে ব্রিটেনের পরিস্থিতিও রীতিমত উদ্বেগের। শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ সরকারী তথ্য অনুসারে, যুক্তরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহে প্রায় এক মিলিয়ন বেড়ে ৪.২৬ মিলিয়নে পৌঁছেছে যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩.৩মিলিয়ন। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) ওমিক্রন বিএ.২ ভেরিয়েন্টেকেই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়েছে। সেদেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন নতুন এই প্রজাতি অত্যন্ত সংক্রমণ যোগ্য। সেই সঙ্গে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও।
আরো পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে প্রকট হচ্ছে স্বাস্থ্য সংকট, সাবধান করল WHO
দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে দ্রুত গতিতে। রবিবার সর্বশেষ তথ্য অনুসারে সেদেশে ৩ লক্ষের বেশি মানুষ মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৮২ জনের। ওমিক্রনের নয়া প্রজাতিকেই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছে দেশের সরকার। এদিকে ইউরোপের একাধিক দেশে সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে থাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে মার্কিন বিজ্ঞানীরা বলেছেন টিকা এবং আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার কারণে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর সংখ্যা কয়েক সপ্তাহ ধরে কমছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় যথেষ্ট ভাল অবস্থানে রয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে শনিবার দেশে কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনের ডোজ ১৮৩ কোটি ছাড়িয়েছে । সেই সঙ্গে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে টিকা পেয়েছেন ১.২০ কোটির বেশি। টিকা এবং সচেতনাতেই ভারতে কোভিড সংক্রমণ হ্রাস পেয়েছে বলেই মত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
Read story in English