Advertisment

'এন্ডেমিক' নয় 'এপিডেমিক' হিসাবেই থেকে যাবে করোনা ভাইরাস, জানাল গবেষণা

মূলত সংখ্যার ফের-ফেরই এর প্রধাণ কারণ? কী জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, জেনে নিন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কোভিড-১৯ ভাইরাস কখনই এন্ডেমিক হিসাবে পরিনত হবে না, এটি থেকে যাবে এপিডেমিক হিসাবে।

কোভিড-১৯ ভাইরাস কখনই এন্ডেমিক হিসাবে পরিনত হবে না, এটি থেকে যাবে এপিডেমিক হিসাবে। এমনই তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়। বায়োসিকিউরিটির একজন বিশেষজ্ঞ এব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন। এন্ডেমিক নয়, করোনা ভাইরাল থেকে যাবে এপিডেমিক হিসাবে। সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল বায়োসিকিউরিটির অধ্যাপক রায়না ম্যাকইনটায়ার জানিয়েছেন, এনডেমিক রোগ, বেশি সংখ্যায় মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পরতেই পারে। তবে করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে যেটা দেখা যাচ্ছে ক্রমাগত আক্রান্তের সংখ্যা হেরফের করছে তা এন্ডেমিকের লক্ষণ নয়। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, যদিও বা সংখ্যার বৃদ্ধি দেখা যায় এনডেমিকের ক্ষেত্রে তাহলেও তা অনেক ধীর গতিতে পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে এপিডেমিক রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত সপ্তাহের হেরফেরে সংখ্যার তারতম্য পরিলক্ষিত হয়। যা আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে।

Advertisment

গবেষণার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা একটি তথাকথিত ‘R naught’ বা ‘R0’ গাণিতিক সমীকরণ ব্যবহার করেছেন। কেন ব্যবহার করা হয়েছে এই মডেল? কত দ্রুত রোগের বিস্তার ঘটে তা বোঝার জন্যই মূলত এই মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। , ‘R0’মডেল দেখায় যে একজন ব্যক্তি কত দ্রুত অপরজন মানুষের মধ্যে সেই রোগকে ছড়িয়ে দিতে পারে, এবং তাতে করে কতজন আক্রান্ত হচ্ছেন। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন ওমিক্রনের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা তিন বা ততোধিক। যার অর্থ ভাইরাসটি আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ছে এবং একটি মহামারীর আকার নিতে পারে বলেছেন গবেষক ম্যাকইনটায়ার।

ম্যাকইনটায়ার উল্লেখ করেছেন যে এটি এমন প্যাটার্ন যা বহু শতাব্দী ধরে গুটিবসন্তের মধ্যে দেখা গিয়েছিল এবং এখনও হাম এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে দেখা যায়। এটি কোভিডের ক্ষেত্রেও একটি তাৎপর্যপূর্ণ প্যাটার্ন, তিনি যোগ করেছেন, যার জন্য আমরা গত দুই বছরে চারটি বড় ওয়েভ দেখেছি।তাঁর কথায় কোভিড ম্যাজিক্যাল ভাবে ম্যালেরিয়ার মতো ‘স্থানীয় সংক্রমণে’ পরিণত হবে না। এটি মাঝে মধ্যেই মহামারীর আকার নেবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রধান ভরসা টিকা। এব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিশ্বস্বাথ্য সংস্থা জানিয়েছে পরবর্তী কোভিড ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক। গ্লোবাল বায়োসিকিউরিটির তরফে জানানো হয়েছে কোভিড কখনই এন্ডেমিকে পরিনত হবে না। এপিডেমিক হয়েই থাকবে। যা সব সময় সমাজের সঙ্গেই থাকবে এবং টিকাহীন অথবা কম ইমিউনিটি ক্ষমতা সম্পন্ন লোকেদের শরীরে থাবা বসাবে।

এক্ষেত্রে আমাদের জানা প্রয়োজন প্যানডেমিক, এনডেমিক এবং এপিডেমিকের মধ্যে তফাৎটা ঠিক কোন জায়গায়।

এন্ডেমিক : এটি স্থানীয় পরিসর হিসেবেই চিহ্নিত হতে পারে। অর্থাৎ যখন নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলেই একটা রোগ নিয়মিত ভাবে ঘটতে থাকে। যখন রোগ স্থানীয় হয়ে ওঠে। এতে অসুস্থতার সংখ্যা স্থির থাকে। এটির ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশ কম, সময়ের সঙ্গে বাড়বে না। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, একই সংখ্যক লোক বারবার আক্রান্ত হয়। যদিও করোনা ভাইরাসের প্রাক্কালে এটিকে এন্ডেমিক হিসেবেই বিবেচনা করা হয় তবে এখন সেই ধারণা একেবারেই পরবর্তী এটি কতটা ভয়ঙ্কর পরিসরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে সেই সম্পর্কে সবাই জানেন।

এপিডেমিক :  এটিও খুব একটা বেশি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে না। খুব বেশি হলেও দেশের অন্দরে এর প্রভাব দেখা গেলেও সীমিত সময়ের জন্য অস্বাভাবিক হারে একটি আক্রান্ত করে মানুষকে। এতে ভাইরাসের মিউটেশন ভালই থাকে। যখন কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে রোগের মাত্রা অপ্রত্যাশিত মোড় নেয় তখন তাকে মহামারী বলে। এটির প্রাদুর্ভাব প্রথম থেকেই লক্ষে আসে। যখন কোনও ভাইরাসের প্যথজেনের মাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, এক ব্যক্তি থেকে অন্যজনের সংক্রমণের ভয় থাকে ঠিক তখনই এটিকে এপিডেমিক বলা হয়। এইরকম একটি রোগ গুটিবসন্ত অথবা স্প্যানিশ ফ্লু এবং কুষ্ঠ।

প্যান্ডেমিক : বিশ্বব্যাপী যখন কোনও রোগ ছড়িয়ে যায়, তখন তাকে প্যান্ডেমিক বলে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ করোনা ভাইরাস। এটি সহজ ভাষায় বিশ্বব্যাপী মহামারী। বিভিন্ন দেশকে একজোট হয়ে নিজেদের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী নিজেদেরকে সুস্থ রাখতে হবে।

সাধারণত এই মহামারী ঘটে নতুন উদীয়মান প্যথজেনের কারণে। আবার সিডিসি এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে এমন রোগ মহামারী হতেই পারে। যেমন প্লেগ! নতুন ভাইরাসের টিকা সহজে পাওয়া যায় না, তাই সংক্রমণ হতেই পারে।

Pnademic Endemic Epidemic Omicron experts view COVID-19
Advertisment