Afghanisthan Crisis: ১৫ অগাস্ট পতন হয়েছে কাবুলের। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি আসরফ ঘানি। তারপর প্রায় এক মাস কেটেছে। অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছে তালিবান। সেই মন্ত্রিসভার মাথায় বসানো হয়েছে তালিবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা আখুন্দজাদাকে। উপ-প্রধানমন্ত্রীর হয়েছেন সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর। কিন্তু গত প্রায় একমাসে একবারেও জনসমক্ষে আসেননি এই দুই নেতা। যদিও নানাভাবে আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বাড় তালিবানের উত্থানের পিছনে এই দু’জনের অবদানের প্রসঙ্গ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথায় তারা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে কানে ভাসছে একটা গুঞ্জন! তালিবানের দোহা শাখার বিরোধী এবং পাক মদতপুষ্ট হাক্কানি গোষ্ঠীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত বরাদর। তাহলে উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকে বাছল তালিবান?
এদিন গুঞ্জন উড়িয়ে এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তালিবানের মুখপাত্র সুহেল সাহিন। তিনি একটি ভয়েস বার্তা প্রকাশ্যে এনে দাবি করেন দিব্যি বেছে আছেন বরাদর। যদিও সেই ভয়েস বার্তায় মানুষটি আদৌ মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর কিনা, নিশ্চিত করা যায়নি। কিন্তু বরাদরের মৃত্যুর গল্প সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এদিন ট্যুইটারে দাবি করেছে সুহেল।
একইভাবে তালিবান একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, কান্দাহার প্রদেশে সংগঠনের একটি বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন তালিবানের প্রাক্তন রাজনৈতিক প্রধান বরাদর। যদিও কোনও সংবাদ মাধ্যম সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। কারণ এর আগেও বহুবার তালিবান দাবি করেছিল, তাদের প্রধান প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য মোল্লা ওমর বেঁচে। সেই দাবির স্বপক্ষেও একাধিক ভিডিও এবং অডিও বার্তা তারা প্রকাশ্যে এনেছিল। কিন্তু মৃত্যুর প্রায় দুই বছর বাদে তালিবান স্বীকার করেছিল ওমরের মৃত্যুসংবাদ। তাই বরাদরের ক্ষেত্রেও সংগঠনের একই নীতি কিনা, ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। এমনকি, সাম্প্রতিককালে তালিবানের অন্তর্বর্তী সরকারের একটি প্রতিনিধি দল কাবুলে সাক্ষাৎ করেছে কাতারের বিদেশ মন্ত্রীর সঙ্গে। সেই প্রতিনিধি দলে ছিল না বরাদর।
যদিও একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি সংঘর্ষে জড়িয়েছিল সিরাজুদ্দিন হাক্কানি গোষ্ঠী এবং বরাদর গোষ্ঠী। সেই সংঘর্ষে পাক মদতপুষ্ট হাক্কানি গোষ্ঠীর আত্মঘাতী হামলায় নিহত বরাদর এবং তাঁর সমর্থকরা। জানা গিয়েছে, হাক্কানি নেটওয়ার্ক বা হাক্কনি গোষ্ঠী তালিবানের কান্দাহার শাখার মিত্রশক্তি। কিন্তু দোহা থেকে তালিবানের যে গোষ্ঠী এযাবৎকাল বিশ্বের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়েছে, তাদের বিরোধী হাক্কানি নেটওয়ার্ক। বরাদরের মৃত্যু জল্পনার মধ্যেও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে আখুন্দাজার সাম্প্রতিক অনুপস্থিতি। তাহলে কি মৃত তালিবানের এই শীর্ষ নেতা? ১৫ অগাস্ট থেকে ধরলে সাম্প্রতিক সময়ে একবারের জন্য প্রকাশ্যে আসেনি তালিবানের এই শীর্ষ নেতাও। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছে আখুন্দাজা। তাও চোখে না দেখা পর্যন্ত আখুন্দাজার অস্তিত্ব মানতে চাইছে না আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন