প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসেই ১৫ বাক্স নথি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আর্কাইভে জমা দিয়েছে। তাতে থাকা নথির মধ্যে চিঠি, উপহার, স্মারকের মতো আরও অনেক কিছুই আছে। এসব তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার সময় সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, যেহেতু এসব সরকারি সম্পত্তি। অর্থাৎ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পত্তি, তাই ট্রাম্পকে শেষ পর্যন্ত এই সব নথিপত্র-সহ সংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র ফেরত দিতেই হল।
যে নথিগুলো ট্রাম্প মার্কিন জাতীয় আর্কাইভের হাতে দিয়েছেন, তার মধ্যে আছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার লেখা ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে চিঠি। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের যে বার্তা বিনিময় হয়েছিল, তা। তারপর ২০১৯ সালে হ্যারিকেন ডোরিয়ানের গতিপ্রকৃতি বোঝাতে ট্রাম্প মার্কার দিয়ে যে রেখাগুলো এঁকেছিলেন, তা। অবশ্য যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাসের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া ট্রাম্পের ব্যাখ্যার একদমই মিল ছিল না। তবুও সেগুলো প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত সামগ্রী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সম্পত্তি।
ভোটে হারার পরও ট্রাম্প প্রথমে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে চাননি। এজন্য তিনি প্রেসিডেন্টের যাবতীয় ক্ষমতার প্রয়োগ করেছিলেন। সেই সময়ই নথিগুলো হোয়াইট হাউস থেকে সরানোর ঘটনা ঘটেছিল। এই সময় ট্রাম্পের সহযোগীরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। একদল ট্রাম্পের সঙ্গে মিলে নির্বাচনের ফলাফলকে খারিজ করার চেষ্টায় ছিলেন। অন্যদল, তাঁকে নিরস্ত করার চেষ্টায় ছিলেন। আর, তৃতীয় দল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এড়িয়ে চলছিলেন।
ট্রাম্প তাঁর এই সব নথি মার্কিন আর্কাইভের হাতে তুলে দেওয়ায় তা মার্কিন নাগরিকদের কাছে প্রকাশ্যে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আর্কাইভের কর্তারা জানিয়েছেন, জানুয়ারির মাঝামাঝি নথিগুলো আর্কাইভে এসেছে। ট্রাম্পের আইনজীবীর মাধ্যমে হস্তান্তরিত হয়েছে নথিগুলো। এরপরও যদি কোনও নথি থেকে যায়, তা মার্কিন জাতীয় আর্কাইভ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই ট্রাম্পের আইনজীবী জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- কেন হেলমেট ছাড়া বাইকের সওয়ারি দুই পুলিশকর্মী? প্রশ্ন করতেই সাংবাদিককে বেধরক মারধর
কিন্তু, এভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এমনকী, বিদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নথি পর্যন্ত হোয়াইট হাউস থেকে নিয়ে চলে গিয়ে ট্রাম্প আইনসঙ্গত কাজ করেননি। এমনই মনে করছে হোয়াইট হাউস। অথচ, এই ট্রাম্পই ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিন্টনের সমালোচনা করেছিলেন। কারণ, তৎকালীন মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি এক বেসরকারি ইমেল সার্ভার ব্যবহার করেছিলেন। অথচ, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর দেখা যায়, তাঁর মেয়ে ইভাঙ্কা এবং জামাই জেয়ার্ড ক্রুশনার সরকারি কাজের জন্য হামেশাই ব্যক্তিগত ইমেল ব্যবহার করছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নথি সংরক্ষণ আইন রীতিমতো কড়া। সেই আইন অনুযায়ী, ট্রাম্প জমানায় কোন কোন কর্তা ব্যক্তিগত ইমেল এবং মোবাইল ফোন সরকারি কাজে ব্যবহার করেছেন। আরও কোনও নথি হোয়াইট হাউস থেকে খোওয়া গিয়েছে কি না, সেসব এখন খতিয়ে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্তারা।
Read in English