লিঙ্গবৈষম্য যে একুশ শতকেও বড় সমস্যা তা পদে পদে উপলব্ধি করেন মহিলারা। বৈষম্যের কারণে কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি-সহ একাধিক বিষয়ে আঝও অবহেলিত নারীরা। কিন্তু একজন উচ্চপদস্থ মহিলাকে সামান্য চেয়ারটুকুও ছাড়তে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আঁতে ঘা লাগে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলল বুধবার। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রথম মহিলা সভাপতি সামান্য চেয়ারটুকুও পেলেন না বসার জন্য। যা গোটা বিশ্বের কাছে লিঙ্গবৈষম্যের জ্বলন্ত নিদর্শন হয়ে রইল।
উরসুলা ভন ডার লিয়েন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট। তিনি এবং ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রধান চার্লস মিচেল তুরস্কতে সফরে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠকের জন্য। বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল তুরস্কের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। সেখানে একটি ঘরে তিনজনের বৈঠকে বসার কথা। টিভি ফুটেজে দেখা যায়, সেই ঘরে ছিল মাত্র দুটি চেয়ার। আর তাতেই বসে পড়েন মিচেল ও এরদোগান। ঘরে ঢুকে তখন ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন উরসুলা।
এরপরই দুজনকে চেয়ার দখল করে বসে পড়তে দেখে কিছুটা ক্ষুব্ধ এবং ইতস্তত হন উরসুলা। এদিকে, দুজনের কেউই চেয়ার ছাড়ছেন না দেখে বাধ্য হয়ে পাশের একটি বড় সোফায় বসে পড়েন উরসুলা। তিনজনের মধ্যে এই বৈঠক চলে আড়াই ঘণ্টা। এই বিষয়ে কমিশনের মুখপাত্র এরিক মামের পরে বলেন, আসলে তিনজনকেই মুখোমুখি বসতে হত। কিন্তু ঘরে দুটি মাত্র চেয়ার ছিল। এই বন্দোবস্ত দেখেই কিছুটা অবাক হয়েছেন কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা।
যাই হোক, বিড়ম্বনা না বাড়িয়ে প্রোটোকল অনুযায়ী, তিনি সোফায় বসলেও পরে নিজের টিমকে সাফ নির্দেশ দেন, ভবিষ্যতে যাতে এমন বিড়ম্বনায় না পড়তে সেদিকে যেন নজর রাখা হয়। মামের আরও বলেছেন, করোনা অতিমারীর কথা মাথায় রেখে উরসুলার ব্যক্তিগত প্রতিনিধিরা এই সফরে আসেননি। আসলে হয়তো এমনটা হত না। তুর্কি প্রেসিডেন্টও এ বিষয়ে কিছু প্রতিক্রিয়া দেননি। পরে এই ঘটনার জন্য মর্মাহত হল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মিচেল।