স্বর্গ বা নরক আদৌ আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। কিন্তু এই পৃথিবীতেই আছে 'নরকের দরজা'। বহু বছর ধরে সেই দরজাকে ঘিরে কৌতূহলের শেষ নেই। তবে এবার অবশেষে বন্ধ হতে চলেছে 'নরকের দরজা'।
নরক বলতে আমরা যা বুঝি এ ঠিক তা নয়। মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমিতে গত ৫০ বছর ধরে দাউ দাউ করে জ্বলছে নরকের দরজার আগুন। আজও যা নেভেনি। 'গেটস অফ হেল' নামে পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে পরিচিত এই আগ্নেয় গহ্বর পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় জিনিস। ১৯৭১ সাল থেকে যা জ্বলেই চলেছে। নেভেনি আগুন।
জনশ্রুতি যে, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কৃতকর্মের ফল হল এই 'নরকের দরজা'। সাতের দশকে কারাকুম মরুভূমিতে তেলের খোঁজে খোঁড়াখুড়ি শুরু করে সোভিয়েত। তখন এখানে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। খোঁড়ার সময় মাটি ধসে বিরাট গহ্বরের সৃষ্টি হয়। তার পর গহ্বর থেকে নির্গত হওয়া মিথেন গ্যাস বাতাসের সংস্পর্শ আসলে দূষণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। ফলে খননকার্য বন্ধ করে গ্যাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যাতে পরিবেশ দূষিত না হয়।
আরও পড়ুন বিক্ষোভ-সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ কাজাখস্তান, বিক্ষুব্ধদের গুলি করে মারার আদেশ প্রেসিডেন্টের
বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন আগুন হয়তো নিভে যাবে। কিন্তু সেই যে আগুন জ্বলেছে, আজ পঞ্চাশ বছর ধরে একইভাবে জ্বলছে সেই গহ্বর। স্থানীয়রা কুসংস্কারের বলে এই গহ্বরের নাম দিয়ে দেয় 'নরকের দরজা'। এতে অবশ্য তাঁদেরই লাভ হয়েছে। কারণ পরবর্তীকালে পর্যটন স্থল হয়ে উঠেছে এই এলাকা।
কিন্তু সম্প্রতি তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বার্দিমুখামেদভ এই 'নরকের দরজা' বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, পঞ্চাশ বছর আগের সোভিয়েতের ভুলের জন্য পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এলাকার মানুষেক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ছে। প্রাকৃতিক সম্পদও নষ্ট হচ্ছে এই ভাবে আগুনে জ্বলে। তাই প্রেসিডেন্ট চাইছেন, শীঘ্রই এই গহ্বরকে বন্ধ করা হোক।