ইউক্রেনে পড়তে গিয়েছিলেন। যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখে সেখান থেকে পালানোর উপায় খুঁজছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। কেউ কেউ ফিরেছেন। অনেকে এখনও ফিরতে পারেননি। কিন্তু, হরিয়ানার ১৭ বছরের নেহা এঁদের থেকে এক্কেবারে আলাদা। বর্তমানে অনেকের মতোই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বম্ব শেল্টারে আছেন ডাক্তারি বিভাগের এই ছাত্রী। তিনি ইউক্রেনেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার অবশ্য একটা আবেগের দিক আছে।
যে বাড়িতে তিনি এতদিন থাকছিলেন, সেই বাড়ির বাড়িওয়ালাকে সাহায্য করতে চান নেহা। সেই বাড়িওয়ালা ইউক্রেনের স্বাধীনতা রক্ষার লড়াইয়ে নেমেছেন। যোগ দিয়েছেন রাশিয়ার সেনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। নেহা যখন প্রথমে ইউক্রেনে গেছিলেন, সেই সময় তিনি কোনও হস্টেল পাচ্ছিলেন না। সেই সময় কিয়েভে এক কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
নেহার মা স্কুল শিক্ষিকা। তাঁর স্কুল দাদরি জেলার চারখিতে। নেহার বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনায়। কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। পরিবার সূত্রে খবর, নেহা সেখানে ভালোই আছেন। এর আগে তাঁর ফোন সুইচড অফ হয়ে গিয়েছিল। এখন তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। বাইরে যুদ্ধ হওয়ার শব্দ পাওয়া গেলেও, নেহারা এখনও আক্রান্ত হননি।
নেহার এক আত্মীয়া সবিতা ঝজ্জর থাকেন ডেনমার্কে। তিনি সেখানকার স্কুল শিক্ষিকা। ঝজ্জরের ঝাঁনসওয়া গ্রামের বাসিন্দা সবিতা। নেহার বাড়ির মালিক তিন দিন আগে যুদ্ধে যোগ দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান নেহার সঙ্গেই বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন। নেহাও তাঁদের সঙ্গেই আছেন। নেহার মা প্রথমে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেহাতে ইউক্রেন থেকে ফেরানোর চেষ্টা করছিলেন।
আরও পড়ুন- সোনালি হাতছানি, যুদ্ধ শেষেই ইউক্রেনে ফিরতে মরিয়া ভারতীয় পড়ুয়ারা
তাতেও ব্যাপক সমস্যা হচ্ছিল। তবুও একটা ব্যবস্থা করা গিয়েছিল। কিন্তু, নেহাই ফিরতে চাননি। এই অসময়ে তিন সন্তান-সহ মহিলাকে ফেলে তিনি আসতে চাননি। নেহার এই সাহসিকতা দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছে তাঁর পরিবার-পরিজন। নিজের জীবনের বদলে তাঁর বাড়ির মালকিন এবং ওই মহিলার তিন ছোট সন্তানের জীবন বাঁচানোই যেন এখন ডাক্তারি পড়ুয়া ভারতীয় মেয়েটির কাছে সবকিছু। হরিয়ানার মেয়েটির এই সাহসী সিদ্ধান্ত যে বিশ্বে ভারতের মুখও উজ্জ্বল করেছে, তা ভেবে রীতিমতো গর্বিত তাঁর পরিবার।
Read story in English