গত কয়েক মাস ধরেই বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। স্বভাবিকের পথে জীবনযাপন। শিথিল হয়েছে করোনাবিধি। কিন্তু, এতে স্বস্তির কিছু নেই। উল্টে, চিন সহ দুনিয়াজুড়ে বে কয়েকটি দেশে সংক্রমণ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। যা ঘিরেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। চলতি মাসের ৭ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটির বেশি। যা আগের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র প্রদান টেডরস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, 'কিছু দেশে নমুনা পরীক্ষা কমানো সত্ত্বেও এই বৃদ্ধি ঘটছে, যার অর্থ ঘটনাগুলি বরফের চূড়া মাত্র।'
বিশ্বের যেসব দেশে সংক্রমণ বাড়ছে:
চিন
চিনেই প্রথম করোনা ভাইরাসের সন্ধান মিলেছিল। ২০২০-তে প্রথম সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত হয় এই দেশেই। পরে আক্রান্তের হার কমে। গত এক বছর ধরে চিনে কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে, বিগত কয়েকদিনে তা ফের মাথাচাড় দিয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারির পর আবারও চিনে করোনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। দেশের বহু শহরে লকডাউন জারি হয়েছে। সংক্রমণ রোধে ব্যাপক হারে নমুনা পরীক্ষা, লকডাউন ও দূরত্ববিধি বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
চিনের শিল্প-হাব সাংহাইয়ে অবশ্য সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম। কোভিড থেকে সাংহাইকে বাঁচাতে ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষা চলছে। স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন আবাসন ৪৮ ঘন্টা ধরে নিষেধাজ্ঞার আওতায়।
দক্ষিণ কোরিয়া
লিওলে ফের করোনা সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। দেশজুড়ে দৈনিক আক্রান্তের হার ৬ লাখ ২১ হাজারের বেশি। ওমিক্রন ভাইরাসের জেরেই সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত। এই হারে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালগুলিতে আর শয্যা মিবে না বলেই আশঙ্কা।
হংকং
শুক্রবার করোনায় হংকংয়ে ২০ হাজারের বেশি আক্রান্ত। জনঘনত্ব বেশি হওয়ায় বিশ্বে প্রতি ১ লক্ষে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে হংকংয়েই। তবে সংক্রমণ রুখতে জিরে টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। ব্রিটেন বা আমেরিকা সহ ৯ রাষ্ট্র থেকে হংকংয়ে উড়ান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্য দেশ থেকে হংকংয়ে এলে যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক। এখানকার স্কুলল ,কলেজ, জিমগুলিও বন্ধ করা হয়েছে।
ইতালি
শুধু রোমেই গত বৃহস্পতিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার ৮৯৫ জন। বুধবার ছিল ৭২ হাজার ৫৬৮। তবে মৃত্যু ১৩৭ থেকে কমে হয়েছিল ১২৮। ২০২০ থেকে এ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪২ জন, যা ইউরোপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আক্রান্তের নিরিখে প্রথমে রয়েছে ব্রিটেন।
ব্রিটেন
গত সপ্তাহ থেকে ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেন অনুযায়ী, কোভিডেআক্রান্ত হয়ে হাতপাতালে ভর্তির সংখ্যা গত ৩ মার্চ ছিল ৮,২১০ জন। যা ১৭ মার্চ বেড়ে হয়েছে ১১,৩৪৬। ১৩ মার্চের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১ লাখ সংক্রমিতের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ১৩.৩৮ শতাংশ।
জার্মানি
জার্মানিতে ফের সপ্তাহান্তে মহামারি বিধিনিষেধের কার্যক হয়েছে। এদেশে গত গত ২৪ ঘন্টায় ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩১ জন আক্রান্ত। 931 টি নতুন কেস রিপোর্ট করেছে। প্রাণ গিয়েছে ২৭৮ জনের।
Read in English