Advertisment

কখন তালিবানরা এসে মারবে, অপেক্ষায় বসে আছেন আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা মেয়র

গত রবিবার যখন কাবুলও দখল করে ফেলল তালিবানরা, সেইসময় এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কাছে ভেঙে পড়লেন জারিফা গাফারি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

তালিবানরা কখন এসে তাঁকে হত্যা করবে এই ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন দেশের প্রথম মহিলা মেয়র।

দুই দশক ধরে দেখা স্বপ্ন, মাত্র তিন মাসেই চুরমার হয়ে গেল। মার্কিন ও ন্যাটো সেনা আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু হতেই মুহূর্তে বদলে গেলে দেশের পরিস্থিতি। তালিবানরা চোখের নিমেষে একের পর এক শহর, প্রদেশ কার্যত বিনা যুদ্ধেই দখল করে ফেলল। একেবারেই অপ্রত্যাশিত ভাবে তালিবানদের পুনরুত্থান দেশবাসীকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বাঁচব কী মরব, এই আশঙ্কা অনেকেরই। যেমন তালিবানরা কখন এসে তাঁকে হত্যা করবে এই ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন দেশের প্রথম মহিলা মেয়র।

Advertisment

জারিফা গাফারি, মাত্র ২৭টা বসন্ত পার করেছেন জীবনের। কিন্তু অল্প সময়েই সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন। ২০১৮ সালে দেশের কনিষ্ঠতম এবং প্রথম মহিলা মেয়র হয়েছেন ময়দান ওয়ার্দাক প্রদেশের। কিন্তু তালিবানরা মেয়েদের শিক্ষা, সাফল্য, কাজকর্ম পছন্দ করে না। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তো আরও বড় অপরাধ। গত রবিবার যখন কাবুলও দখল করে ফেলল তালিবানরা, সেইসময় এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার কাছে ভেঙে পড়লেন জারিফা। এমনটা তো তিনি চাননি। শুধু তিনি কেন, কোনও নিরীহ আফগান-ই চাননি।

তালিবানরা যত অগ্রসর হয়েছে, ততই মৃত্যুভয় গ্রাস করেছে জারিফাকে। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি বসে অপেক্ষা করছি, কখন ওরা আসবে আমাকে মারতে। আমার পরিবারে আমাকে সাহায্য করার কেউ নেই। আমি পরিবার-স্বামীর সঙ্গে বসে আছি। আর ওরা আমার মতো মানুষদের জন্য আসবে আর মেরে ফেলবে। আমি আমার পরিবারকে ছাড়তে পারব না। আমি কোথায় যাব? তারপরই কথা বন্ধ হয়ে যায় তাঁর।

আরও পড়ুন ‘ক্ষমার’ পথে হেঁটে মহিলাদেরও সরকারে শামিল হওয়ার আহ্বান তালিবানদের

গত বছর ১৫ নভেম্বর তাঁর বাবা জেনারেল আবদুল ওয়াসি গাফারিকে গুলি করে মারা হয়। তার ২০ দিন আগেই জারিফাকে তৃতীয়বার খুনের চেষ্টা বিফল হয়। তালিবানদের শক্তিবৃদ্ধির ফলে জারিফাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে কাবুলে বিশেষ কাজ দেওয়া হয়। আহত সৈন্য ও নাগরিকদের সেবা করার সুযোগ পান তিনি।

আরও পড়ুন ‘তালিবানদের বিশ্বাস নেই’, শান্তি-সুরক্ষার আর্জি নিয়ে কাবুলে বৈঠক শিখ ও হিন্দু নেতাদের

সপ্তাহ তিনেক আগে জারিফা বলেছিলেন, যুবসম্প্রদায় সবই দেখতে পাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমার বিশ্বাস, ওরা জাতির অগ্রগতি ও অধিকারের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাবে। দেশের ভবিষ্যতের আশা এখনও আছে। রাজধানীর পতন হতেই বহু প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, কিন্তু জাফারিদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কোথাও লুকানোর ঠাঁই নেই।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Taliban Afghanistan
Advertisment