সকলেই আমরা করোনা লকডাউন এই শব্দগুলোর সঙ্গে প্রায় বছর দুয়েক ধরেই পরিচিত। একের পর এক নয়া স্ট্রেনের দাপটে নাজেহাল অবস্থা বিশ্ববাসীর। ইতিমধ্যেই ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কয়েকদিন ধরে ভারতের দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা কমতেই একটা আশার আলো মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, তবে কী শেষ হতে চলেছে মহামারির? যদিও আইসিএমআর জানিয়েছে, মার্চ থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হবে। কমবে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যাও।
তবে একটা বিষয় সকলকেই ভাবাচ্ছে, দীর্ঘ দু’বছরের করোনা তাণ্ডবলীলার দাপট সামাল দেওয়া গেলেও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক স্তরে যে ক্ষতি হয়েছে তার কী হবে? লকডাউন সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের ওপর বড় আঘাত এনেছে। গত ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতে চওড়া হয়েছে বেকারত্ব। বিশ্বস্বাস্থ্য সংখ্যা এই বিষয়ে জানিয়েছে, করোনার প্রকোপ কমলেও তার প্রভাব থাকবে আগামী কয়েক বছর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ডাঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস এক বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছেন। ডব্লিউএইচও প্রধান বলেছেন যে প্রভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হবে পিছিয়ে পড়া তথা দরিদ্র দেশগুলিতে। কেন? তার কারণ ব্যখ্যা করতে গিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান জানিয়েছেন, পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে টিকাদানের হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে করোনা ভাইরাসের বিস্তার সেইদেশগুলির ওপর আরও ব্যাপক ভাবে পড়বে। সেই সব দেশে বাড়বে আক্রান্তের সংখ্যা। মহামারীটি যত দীর্ঘায়িত হবে ততই প্রভাব আরও খারাপ হবে।
ডাঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস জানান, আগামী কয়েক দশক ধরে করোনা ভাইরাসের প্রভাব সারা বিশ্ব অনুভব করবে। মহামারি যত যত দীর্ঘায়িত হবে ততই তার প্রভাব আরও বেশি সুদূরপ্রসারী হবে। ডঃ টেড্রস বলেন যে বর্তমানে কমনওয়েলথ দেশগুলির জনসংখ্যার মাত্র ৪২ শতাংশ ডবল ডোজ টিকা পেয়েছে এবং দেশগুলির মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে।
আফ্রিকান দেশগুলির অনেক দেশের মধ্যে এই হার মাত্র ২৩ শতাংশ। তিনি আরও বলেন টিকাদান শুধুমাত্র জীবন বাঁচানোর জন্য নয়, জীবিকা বাঁচানোর জন্য’ও। যদিও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন করোনার নয়া প্রজাতির বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে নতুন টিকার প্রয়োজন হবে। টিকাদানে হার ত্বরান্বিত করা একান্ত জরুরি ভাইরাসে বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে। ভারত ইতিমধ্যেই টিকাদানে রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের প্রায় ১৭০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই করোনা টিকা পেয়েছেন।