মরিয়া চেষ্টা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হারতেই হল 'কাপ্তান'কে। মধ্যরাতে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আস্থা ভোটে পরাজিত হলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ফলে শাসকক্ষমতাচ্যুত হল তেহেরিক-ই-ইনসাফ সরকার। সোমবার ফের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অধিবেশন বসার কথা রয়েছে। ওই সভা থেকেই পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রীর নাম নির্ধারণ করা হতে পারে।
১৯৪৭ সালের পর এখও পর্যন্ত কোনও পাক প্রধানমন্ত্রীই পাঁচ বছরের মেয়াদে শাসন ক্ষমতা চালাতে পারেনি। কখনও সেনার অঙ্গুলিহিলনে, আবার কখনওবা রাজনৈতিক নানা কারণে পদ খুইয়েছেন প্রধানমন্ত্রীরা। ইমরান খানও তার ব্যতিক্রম হলেন না। মেয়াদ ফুরনোর আগেই কুর্সি থেকে অপসারিত হতে হল তাঁকে।
পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবার সকাল ১০টায় ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা বাহানায় তা বিলম্বিত হয়। আগাগোড়াই অ্যাসেম্বলিতে ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু আদালতের। পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আস্থা ভোট না হলে ইমরান খান, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। প্রচুর পুলিশের প্রিজন ভ্যান নজরে পড়ে। কেউ যাতে দেশ ছাড়তে না পারে তার জন্যও পদক্ষেপ করা হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত ইমরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবেন না জানিয়ে স্পিকার আসাদ কাইসার এবং ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন। এরপর পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ার প্যানেলের সদস্য আয়াজ সাদিক স্পিকারের দায়িত্ব সামলান। মধ্যরাতের আগেই তিনি আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
প্রথা মেনে মধ্যরাতে দুই মিনিটের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করা হয়। রাত ১২টার পর রবিবার ফের শুরু হয় নয়া অধিবেশন। সেখানেই মধ্যরাতে আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ৩৭২ আসন বিশিষ্ট পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে (ম্যাজিক ফিগারের সংখ্যা ১৭২) বিরোধী জোট পায় ১৭৪টি ভোট। ইমরান সরকারের পক্ষে একটিও ভোট পড়েনি। ফলে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়।
মধ্যরাতেই ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবন ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ইমরান অনুগামী ও তেগেরিক-ই-ইনসাফের কর্মীরা রাস্তায় নেমে পুরো ঘটনার প্রতিবাদে মুখর। এর মধ্যেই পাক সুপ্রিম কোর্টের তরফে নির্দেশ যে, দেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের কোনও নেতাই দেশ ছাড়তে পারবেন না।
এখনও পর্যন্ত পাক রাজনীতির গতিপ্রকৃতি অনুসারে পরবর্তী পাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফ। আস্থা ভোটে জয়ের পরই তিনি জানিয়েছেন যে, বদলার রাজনীতিতে তিনি বিশ্বাসী নন।
Read in English