তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি ছাড়তে চাননি। বিদেশের চাপে সরতে হচ্ছে অভিযোগ তুলে কুর্সি বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, কুর্সি টিকিয়ে রাখতে পারেননি। তাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তেই হয়েছে। তবে, ফিরে আসার লড়াই ছাড়েননি ইমরান খান। ফের বুঝিয়ে দিলেন সেকথা। বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকার এবার ফের বিস্ফোরক দাবি করেছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দাবি, তিনি পাকিস্তানে মার্কিন সেনাঘাঁটি তৈরিতে বাধা দিয়েছিলেন।
আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো এবং মার্কিন জোট সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেনাঘাঁটি বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু, ইমরান তাতে সায় দেননি। তার জেরেই তাঁকে পাকিস্তানের উজির-এ-আজম বা প্রধানমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হল বলেই অভিযোগ করেছেন ইমরান।
তিনিই পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাঁকে অনাস্থা প্রস্তাবের জেরে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি খোয়াতে হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিদেশে বসবাসরত পাকিস্তানের নাগরিকদের একটি ভিডিওবার্তা দিয়েছেন ইমরান। তাতে বলেছেন, 'আফগানিস্তান থেকে কোনওরকম জঙ্গি কার্যকলাপ চললে, তার জবাব দেওয়ার জন্যই পাকিস্তানে সেনাঘাঁটি বানাতে চেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।'
ইমরানের দাবি, তাঁর মনে হয়েছিল, বিষয়টি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, তিনি স্বাধীন বিদেশনীতি চান। আর, সেই কারণেই পত্রপাঠ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ইমরানের দাবি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জঙ্গিদমন অভিযানে নেমে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ৮০ হাজার প্রাণ খুইয়েছে। কিন্তু, তাকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের স্বীকৃতি দেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই বলিদানের কোনও প্রশংসা করেনি। উলটে, বহু মার্কিন রাজনীতিবিদ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের মদতদানের অভিযোগ এনেছেন।
আরও পড়ুন- বিজয় দিবসের আগেই বড় পরাজয়, ইউক্রেনের খারকিভ হাতছাড়া রাশিয়ার
এই প্রসঙ্গে ইমরান বলেছেন, 'প্রথমত তারা আমাদের দোষারোপ করেছে। মোটেও আমাদের প্রশংসা করেনি। আমাদের উপজাতি এলাকায় ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। তারপর তারা ফের এখানে সেনাঘাঁটি তৈরির কথা বলছে। আমি এই প্রস্তাবে একদমই সাড়া দিইনি। আর, সেখান থেকেই আমার সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যার শুরু হয়েছিল।' এর আগে ২০২১ সালের জুনে ইমরান এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন তিনি পাকিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনাঘাঁটি তৈরির বিরোধী।
আফগানিস্তানে জঙ্গি কার্যকলাপ রোধের জন্য তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীকে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দিতে চান না। সেই সময়ও তিনি অভিযোগ করেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ রুখতে পাকিস্তানে সেনাঘাঁটি তৈরি করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কুর্সি চলে যাওয়ার পর এখনও তিনি সেই একই অভিযোগ করছেন। যার অর্থ, ইমরানের কথার মিল আছে। আর, তিনি সত্যিই বলছেন বলে দাবি তাঁর অনুগামীদের। তবে, এতকিছু বললেও কুর্সি চলে যাওয়ার পিছনে পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা রোধে তাঁর সরকারের ব্যর্থতার বিষয়টি ভিডিওবার্তায় সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন ইমরান।
Read story in English