পদ ছাড়তে চাইছেন না। কিন্তু, পাকিস্তানের উজির-এ-আজমের কুর্সি টিকিয়ে রাখাটাও সহজ হবে না ইমরান খানের। ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে পদ ছাড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভোটে যেতে চান ইমরান। তবে, সেই সুযোগ তিনি আদৌ পাবেন কি না, সেটাও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। সেসব এখন জল্পনার স্তরে থাকলেও ইমরান যে বর্তমান সরকারের প্রধান হিসেবে আর মাত্র ১৫ দিনের প্রধানমন্ত্রী, সেটা আপাতত স্পষ্ট। আর, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমদ।
একইসঙ্গে অবশ্য তিনি নিজের সরকারের প্রধান ইমরানের হয়ে ঝোল টেনে বলেছেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলাম। তিনি নিজেই বলেছেন আর ১৫ দিন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তিনি নিজেই পাকিস্তানবাসীকে ভোটপ্রস্তুতি নিতে বলেছেন।' বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে নির্বাচন ছাড়া উপায় নেই। পাকিস্তানের সংবিধানের নিয়মমতো ৯০ দিন বা তিনমাসের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে বলেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সেদেশের তথ্য-সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ফারুক হাবিব।
এর আগে রবিবারই ইমরানের পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট মুলতুবি করে দেন। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরিও বিরোধীদের ডাকা অনাস্থা প্রস্তাব, 'অসাংবিধানিক' তকমা দিয়ে বাতিল করে দেন। তারও আগে বিরোধীরা পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কায়জারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। তারপরই কায়জারের আসন সামলাতে নিয়মমাফিক সুরি আসেন।
এভাবে তাঁদের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল হয়ে যাবে, তা বিরোধীরা কল্পনাও করতে পারেননি। অন্যতম বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি অভিযোগ করেছেন, ইমরান খান পাকিস্তানের সংবিধানকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন। এর বিরুদ্ধে তাঁদের জনপ্রতিনিধিরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন।
বিরোধীদের আশা, এক্ষেত্রে পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্ট সুকৌশলে একটা দরবার করতে পারে। সুপ্রিমকোর্ট বলতে পারে যে এভাবে পার্লামেন্ট মুলতুবি করে দেওয়া অবৈধ। পাশাপাশি, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ না-দেওয়াটাও অসংসদীয়। এটা বলে ফের ভোটাভুটির জন্য চাপ দিতে পারে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। পাকিস্তানের নিয়ম অনুযায়ী যে কোনও অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এলে তিন দিনের একটা সময় দিতে হয়। আবার তিন দিনের পর বিরোধীরা একটা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এলে ফের ভোটাভুটির নির্দেশ দিতে পারে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। আর একটা হতে পারে যে, একটা তদারকি সরকারও সুপ্রিম কোর্ট গঠন করে দিতে পারে। আর, সেটা ইমরান খানের নেতৃত্বে নয়। সব মিলিয়ে বলাই যায় যে এখনও ইমরানের সংকট কাটেনি।
Read story in English