পরাজয় যে হতে চলেছে তার আঁচ গত কয়েকদিন ধরেই করেছিলেন কাপ্তান। তবুও অধিনায়কচিত ধারণা থেকে বার্তা দিয়েছিলেন কুর্সি ধরে রাখতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাবে। তবে পারেননি। মধ্যরাতের আস্থাভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি। তবে জানা যাচ্ছে যে, লজ্জার হার বাঁচাতে পাক সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়াকে সরাতে চেয়েছিলেন তিনি।
বিবিসি ঊর্দুদে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, শনিবার জেনারে অ্যাসেম্বলিতে যাননি প্রধানমন্ত্রী ইমরান। বদলে তাঁর বাসভনেই বিভিন্ন সময়ে আধিকারিকদের যাওয়া-আসা লক্ষ্য করা গিয়েছে। গতকাল পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ১৩ ঘণ্টা লম্বা অধিবেশন বসেছিল। সেই সময়ই হেলিকপ্টারে করে ইসলামাবাদে পাক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েছিলেন পাক সেনা প্রধান। বিবিসি ঊর্দুর রিপোর্ট অনুযায়ী, হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছানো এক শীর্ষ সেনা কর্তাকে অপসারণের চেষ্টা করেছিলেন ইমরান খান। তাঁদের মধ্যে প্রায় মিনিট ৪৫ কথা হয়েছিল। বাজওয়াকে দেখে ইমরান খান কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ওই বৈঠক যে খুবর মসৃণ ছিল না তাও খবর। ইমরান ভেবেছিলেন তাঁর নির্দেশের পর নবনিযুক্ত সেনা প্রধানই হয়তো তাঁর বাসভনে এসে দেখা করবেন। যদিও সে গুড়ে বালি পড়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেনা প্রধানের অপসারণের বিজ্ঞপ্তি জারি না করাতেই বাজওয়াকে সরানো যায়নি বলে সূত্রের খবর।। বিবিসি ঊর্দুতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়নি যে, শীর্ষ কোন সেনাকর্তাকে পদ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে, যেহুতু বাজওয়া গিয়েছিলেন তাই তাঁকেই অপসারণের চেষ্টার কথা ধরে নেওয়া হচ্ছে।
অপসারণের আগেই বাজওয়াকে সরানোর জন্য ইমরান চেষ্টা করেছিলেন বলে খবর রটে গিয়েছিল। যা অবশ্য অসত্য বলে দাবি করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। যদিও এর আগে এক পিটিআই সাংসদও দাবি করেছিলেন যে, পাক সেনা প্রধানকে সরিয়ে সেনা বাহিনীর অন্দরে বিদ্রোহের আগুন জ্বালাতে চেয়েছিলেন ইমরান খান।
যদিওসব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে পাক সেনা ও প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেনা জানিয়েছে যে, বিবিসি ঊর্দু প্রতিবেদনটিকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বিভ্রান্তিমূলক’ প্রচার বলে দাবি করা হয়েছে।
আইএসআই প্রধান নিয়োগকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই পাক সেনা প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে চাপানউচোর ছিল। তার মধ্যেই ইমরান খানের আমেরিকা বিরোধী মন্তব্য নিয়েও এই দু'জনের বিরোধ ছিল। ইমরান যখন আমেরিকাকে বিঁধছেন তখনই ওয়াশিংটনকে 'গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার' বলে অভিহিত করেছিলেন বাজওয়া। রাশিয়ার সঙ্গেও ইসলামাবাদের খুল্লামখুল্লা মেলামেশা নাপসন্দ ছিল সেনা প্রধানের। ইমরান ভেবেছিলেন বাজওয়াকে সরিয়ে অন্য কাউকে সেনা প্রধানের পদে বসালে সরকার ফেলতে তাঁর খাড়া করা বিদেশি 'ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব' আরও দৃঢ় হবে। বেঁচে যেতে পারে সরকার। যদিও তা সম্ভব হয়নি।
Read in English