হাজারো চেষ্টা করেও গণতান্ত্রিক উপায়ে তাঁর সরকারকে বাঁচানো যাবে না। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে এটা স্পষ্ট বুঝে গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কারণ, বিরোধীরা একজোট। শরিকরা বিরোধীদের হাতে হাত মিলিয়েছে। এই অবস্থায় কীভাবে তাঁর সরকার টিকিয়ে রাখা যায়, এখন সেই রাস্তাই খুঁজে চলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
পরমাণু শক্তিধর ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বাধা দিচ্ছে মেন্টর চিন। কারণ, সেই ক্ষেত্রে উপমহাদেশে আমেরিকার প্রভাব ফের বাড়তে পারে। আর, আমেরিকাও চায় না, পাকিস্তান এবং ভারত যুদ্ধে জড়াক। এই দুই দেশের বিশাল বাজার তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাছাড়া, ভারত-পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর। তাই, তাদের যুদ্ধ উত্তেজনার বশে বড় অঘটন ঘটালে, বিশ্বের জলবায়ুর ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। গলে যেতে পারে মেরুর বরফ। তার ক্ষতি সব দেশকেই ব্যাপক ভাবে বইতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদের আগুনে যাবতীয় রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি পুড়িয়ে খাক করে দিতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বাইশ গজের মতো পাকিস্তানের রাজনীতিতেও হয়ে উঠতে চান কিং খান। তাই জাতীয়তাবাদের আঁচ বাড়াতে বুধবার ফের বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের গল্প ফাঁদলেন ইমরান। বুধবার তাঁর পাকিস্তানবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে তাঁর পূর্বসূরিদের ধারা বজায় রেখে ইমরান সেই পথে হাঁটেননি। বদলে তাঁর সতীর্থ মন্ত্রী এবং সাংবাদিকদের হাতে একটি চিঠি তুলে দিয়েছেন। ইমরানের দাবি, এই তথ্য প্রমাণ করছে, তাঁর সরকার ফেলার জন্য বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। গত ২৭ মার্চ এমনই এক চিঠি হাতে ওয়াজিরিস্তানের জনসভায় বিদেশি ষড়যন্ত্রের গল্প ফেঁদেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। সেই সময়ই তাঁর সরকার পতনের চূড়ান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, এভাবে আর কতদিন কুর্সি বাঁচাবেন তিনি?
আরও পড়ুন- কী এই এমকিউএম, যে দল দূরে সরে গিয়ে লিখে দিল ইমরানের ভাগ্য?
অতীতেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীরা পার্লামেন্টে অনাস্থার মুখে পড়েছেন। সেই তালিকায় ইমরানের নম্বর তিন। মজার বিষয় হল, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আনা কোনও অনাস্থাই এতবছরেও সরকার ফেলতে পারেনি। যা প্রমাণ করে, প্রতিবেশী দেশটিতে গণতন্ত্র ঠিক কতটা অসাড়। আর, সেই সুযোগে বারবার দেখা গিয়েছে, সামরিক শাসকরা দখল করেছেন ইসলামাবাদের কুর্সি। দুর্বল গণতন্ত্র ছেড়ে সরাসরি স্বৈরতন্ত্রের রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান।
Read story in English