ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমালোচনার পর ইউক্রেনকে ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি। এর আগে দেশটি বলে আসছিল, সংঘাত কবলিত কোনও দেশে তারা অস্ত্র সরবরাহ করবে না। শনিবারের এই ঘোষণার ফলে জার্মানি এই নীতি থেকে সরে আসলো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এখবর জানিয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা সমাবেশের পর থেকেই কিয়েভ জার্মানির কাছে অস্ত্র দেওয়ার অনুরোধ করে আসছিল। কিন্তু জার্মান সরকার জানায়, তাদের জোট সরকারের সমঝোতা অনুসারে সংঘাত কবলিত অঞ্চলে অস্ত্র সরবরাহ করতে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
অবশ্য অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানালেও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য নিজস্ব অর্থায়নে একটি সামরিক হাসপাতাল ও পাঁচ হাজার হেলমেট প্রদানের ঘোষণা দেয়। শুক্রবার জার্মান সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হেলমেটগুলো কিয়েভের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। যদিও তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল কম হয়নি এবার সরাসরি যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াল জার্মানি।
শনিবার পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস টুইটারে ঘোষণা দেন, রাশিয়া হামলা সময়ের একটি বড় পরিবর্তন। পুতিনের আক্রমণকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষার জন্য যতটা করি ততটাই ইউক্রেনকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, তাই আমরা ১ হাজার ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ও ৫০০ স্টিনজার ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের বন্ধু ইউক্রেন সরবরাহ করব।
জার্মানি যখন হেলমেট পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল তখন কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎচকো ‘কৌতুক’ আখ্যায়িত করে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় বলেছিলেন, এরপর জার্মানি কেমন সহযোগিতা পাঠাবে? বালিশ?।
এদিকে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন রুখতে এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি ফোন করে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনকে সমর্থনের জন্য মোদীকে অনুরোধ করেছেন জেলেনস্কি। তাঁর দাবি, ১ লক্ষের বেশি রুশ হামলাকারী ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে, আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে বোমা, গোলা ছোড়া হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আগ্রাসন রোখার আবেদন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়ার আক্রমণ জারি রয়েছে। সময়ের সঙ্গেই লড়াই তুঙ্গে উঠেছে ইউক্রেনে। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ১৯৮ জন নিহত হয়েছেন। জখম হাজারের বেশি। শনিবার ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিক্টর লিয়াশকো এই ঘোষণা করেছেন। তাঁর দাবি, মৃত ১৯৮ জনের মধ্যে রয়েছে ৩টি শিশু। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে, এই সংখ্যায় সেনার মৃত্যু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কিনা। ইউক্রেনের বাতাসে শুধুই বারুদের গন্ধ। রাজধানী কিয়েভে জারি রয়েছে য়ুদ্ধ। ইউক্রেন সেনা এবং সাধারণ মানুষের মিলিত প্রতিরোধের মুখে পড়ে আরও বড় আকারে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। শনিবারই কিয়েভের বহুতলে মিসাইল হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের আট যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের দাবি করছে রাশিয়ার। পালটা রাশিয়ার সাড়ে তিন হাজার সৈন্যকে হত্যার দাবি ইউক্রেনের।