একদিকে আমেরিকা ও তার জোটসঙ্গীরা। অন্যদিকে রাশিয়া-চিন। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘে নিরপেক্ষ অবস্থান পোক্ত করল ভারত। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব পেশ করেছিল রাশিয়া। তা নিয়ে ভোটাভুটি হয়। কিন্তু, রাশিয়ার প্রস্তাবে সাড়া না-দিয়ে সেই ভোটাভুটিতেও বিরত থাকল ভারত। প্রস্তাব যথারীতি আমেরিকা ও নিরাপত্তা পরিষদের অন্য দেশগুলো সমর্থন করেনি। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র দুটি। একটি রাশিয়ার, অন্যটি চিনের। স্বভাবতই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার আনা এই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি।
এর আগে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবও সমর্থন করেনি ভারত। যার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল আমেরিকা। রাষ্ট্রসংঘে গত একমাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা একাধিক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ভোটদানে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দফতর অভিযোগ পর্যন্ত করেছে যে ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান বেশ নড়বড়ে। তারপরও নিরপেক্ষ অবস্থান বদলাতে রাজি হয়নি নয়াদিল্লি। কারণ, ভারত আগেই স্পষ্ট জানিয়েছে যুদ্ধ চায় না। শান্তি চায়। আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক, এটাই কাম্য।
এই ভোটাভুটিতে নিরপেক্ষ অবস্থান তুলে ধরাই যে ভারতের প্রধান লক্ষ্য, তা স্পষ্ট করে দিতে বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রস্তাব পেশের কয়েক ঘণ্টা আগে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। দেশে বর্তমানে শ্রিংলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। বিশেষ করে গ্রিস এবং ওমানের বিদেশমন্ত্রীরা এখন দিল্লিতে। তাঁদের সঙ্গে বিদেশ সচিবরাও এসেছেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গেও ওমান এবং গ্রিসের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে শ্রিংলা উপস্থিতি স্বভাবতই প্রয়োজন ছিল।
এমন পরিস্থিতিতেও রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শ্রিংলার যোগদানকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে নয়াদিল্লি। তাই তাঁর তড়িঘড়ি নিউ ইয়র্ক সফর স্থির করা হয়েছে। শ্রিংলা পৌঁছনোর পর রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, 'বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে নিউ ইয়র্কে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে উচ্ছ্বসিত। বিদেশ সচিব রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। এই বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘ এবং আরব দেশগুলোর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে।' এই পর্যন্ত লিখলেও, বৈঠকে রাশিয়ার প্রস্তাব আনার সম্ভাবনা সংক্রান্ত বিষয়টি উহ্যই রেখেছেন তিরুমূর্তি।
Read story in English