যেন দিন ঘনিয়ে আসার পালা। কখন যে রাজধানী কিয়েভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র একের পর এক আছড়ে পড়বে, জানেন না ইউক্রেনবাসী। জানেন না কেউই। মার্কিন এবং ন্যাটো জোট শুধুই আন্দাজ করছে, হামলাটা শীঘ্র ঘটবে। গত বুধবারই সেই দিন বলে জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গুপ্তচর বিভাগ খবরও দিয়েছিল। বাইডেন প্রকাশ্যে তা বলে দিয়েছিলেন। পূর্বাভাস মেলেনি। তবে, স্বস্তির শ্বাস ফেলতে পারেনি হোয়াইট হাউস। ফের আগামী সপ্তাহে হামলা শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ওয়াশিংটন। পূর্বাভাস ফের না-মিলুক সেটাই চায় পেন্টাগন।
তবে, চাওয়া তো একরকম। বাস্তবে কী হবে, সেটা জানেন শুধু পুতিন আর তাঁর ক্রেমলিনের দফতর। তাই, এমন অজানা পরিস্থিতির ওপর আর ভরসা রাখতে নারাজ কেউই। সেই কারণে, ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস নতুন করে রবিবার ভারতীয়দের ইউক্রেন ছাড়তে বলল। এর আগেও বলেছিল। তারপর বেশ কয়েকটা দিন কেটেছে। নতুন করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই যেন নতুন করে সতর্কতা জারি করা হল। এমনটা আপাতপক্ষে বিভিন্ন মহল মনে করলেও, বেশি মুখ খুলতে নারাজ কিয়েভে ভারতীয় দূতাবাসের কেউই।
আরও পড়ুন ইউক্রেনে গোলা-গুলি, উত্তপ্ত মিউনিখ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি
বহু ভারতীয় পড়ুয়া ইউক্রেনে উচ্চশিক্ষার আশায় গিয়েছেন। সেখান থেকে ডাক্তারি পাশ করে কেউ চান বিদেশের কোথাও পাকাপাকি জায়গা খুঁজতে। কেউ চান আবার দেশে ফিরতে। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি সবটাই যেন ধোঁয়াশায় ফেলে দিয়েছে। যে বিভিন্ন সংস্থার হাত ধরে ওই পড়ুয়ারা ইউক্রেনে পড়তে এসেছিল, সেই সংস্থাগুলোর সঙ্গে ভারতীয় ছাত্রদের যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।
কোন বিমান কখন ইউক্রেন ছাড়বে, কোন বিমানে তাঁদের আসনের ব্যবস্থা হয়েছে, সব সেই সংস্থাগুলোই দেখছে। এজন্য অনেক বেশি অর্থও খরচ করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এমনিতেই বিদেশে পড়তে আসার ব্যাপক খরচ। মরার ওপর, খাঁড়ার ঘায়ের মতো আবার বেশি অর্থ খরচ করে পড়ি কী মরি করে দেশে ফেরা। রীতিমতো নতুন করে তৈরি হওয়া এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। যার কারণে রীতিমতো উদ্বেগে ইউক্রেনের ভারতীয় পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন এখনও আলোচনার রাস্তা শেষ হয়ে যায়নি, পুতিনের কাছে অনুনয় বাইডেনের
শনিবার থেকেই পূর্ব ইউক্রেনের দোনেত্স্ক শহর রুশ প্রভাবিত বিদ্রোহীদের মর্টারের গোলায় উত্তপ্ত। এই সংঘর্ষ ২০১৪ থেকেই চলছে। তবে, শনিবার জার্মানির মিউনিখে ইউরোপীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের সময় থেকেই সংখ্যাটা যেন একটু বেড়েছে। যার পিছনে রাশিয়ার মদত আছে বলেই দাবি মার্কিন জোট এবং ন্যাটোর।
পালটা, রাশিয়ার দাবি, এই হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। সেই কারণে দোনেৎস্ক এবং লুগাংস্ক থেকে বাসিন্দাদের সরানো হচ্ছে। তাদের মাটভিভ কুরগান এলাকার শরণার্থী শিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে বলেই ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন গুলি-বারুদ আছড়ে পড়ার আগেই ভয়ে আধমরা বাসিন্দারা, স্তব্ধ জনজীবন
পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মনে করছেন, ১৯৪৫ থেকে এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার এই হামলাই হতে চলেছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। কারণ, ন্যাটো এই লড়াইয়ে ইউক্রেনের পাশে থাকবে বলেই জানিয়েছে।