ইউক্রেন যুদ্ধের ১০ দিন পেরিয়েছে। 'অপারেশন গঙ্গা'য় অনেক ভারতীয়কে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বহু ভারতীয় পড়ুয়াই দেশে ফিরে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের নানা অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকী, ইউক্রেন সীমান্ত না- পেরোলে ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্য পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
Advertisment
তারমধ্যে সবচেয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সুমি এলাকায় আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে। রাশিয়ার দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এই ১০ দিন পরও খারকিভে আটকে আছেন তিন হাজার ভারতীয়। পিসোচিনে এখন আটকে আছেন ৯০০ ভারতীয়। আর, সুমি এলাকায় সংখ্যাটা ৬৭০। যদিও সেখানে আটকে থাকা পড়ুয়াদের দাবি, ৬৭০ না। সংখ্যাটা আসলে ৮০০।
উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনে সুমি এলাকা। এই এলাকা থেকে পড়ুয়াদের বের করতে শনিবার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছিল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। দুই দেশ এই সংঘর্ষবিরতির নাম দিয়েছিল, 'নীরবতার শাসন'। রাশিয়া ঠিক করেছিল, আজভ সাগরের কাছে মারিউপোল সীমান্ত ও দোনেত্স্ক-এর উত্তরে ভলনোভাখা সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেন থেকে সাধারণ নাগরিকদের বের করে আনা হবে। রাশিয়ার সময় সকাল ১০টায় ঘোষিত 'নীরবতার শাসন' শুরু হয়।
যদিও ইউক্রেন অভিযোগ করে, রাশিয়া চুক্তি ভঙ্গ করেছে। হামলা চালানো শুরু করেছে। তার ফলে ওই দুই প্রান্ত দিয়ে সাধারণ নাগরিকদের সরানো অসম্ভব হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, সুমি- তে আটকে থাকা নাগরিকদের হাতে ওষুধ থেকে খাবার, কিছুই পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্তের দিকে আটকে থাকা বাসিন্দারা কয়েকশো কিলোমিটার পেরিয়ে ইউক্রেন থেকে বেরোতে পেরেছেন। কিন্তু, পূর্ব সীমান্তে রাশিয়া দিয়ে কেউই ইউক্রেন ছাড়তে পারেননি। ফলে, পূর্ব সীমান্তে আটকে থাকা ভারতীয়রা সেখানেই থেকে গিয়েছেন। মারিউপোল এবং ভলনোভোখা সীমান্ত দিয়ে বেরোতে পারেননি।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, খারকিভে আর বেশি ভারতীয় আটকে নেই। অনেককেই সরানো হয়েছে। পিসোচিন থেকে প্রায় সব ভারতীয়কেই সরানো হয়েছে। এবার সুমি থেকে কীভাবে ভারতীয়দের সরানো যায়, তা দেখা হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানান, সুমিতে আটকে থাকা পড়ুয়াদের সরানো রীতিমতো কঠিন। কারণ, সেখানে গোলাগুলি চলছে।
আর, গোলাগুলির জন্য কোনও পরিবহণ ব্যবস্থাই করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে যাতে সুমি এলাকায় আটকে থাকা ভারতীয়দের নিরাপদে বের করে আনা যায়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। সমস্ত পক্ষের সঙ্গে এই ব্যাপারে কথাবার্তা চালাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক।