৫৪ বছর কেটে গিয়েছে। তবু অক্ষত রয়েছে সংবাদপত্র। ফ্রান্সের তুষারাবৃত মঁ ব্লা পার্বত্য উপত্যকার বসনস-এ গ্লেসিয়ারে এবার পাওয়া গেল ভারতীয় এক সংবাইপত্র। যে সংবাদপত্রের শিরোনাম 'ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী'। ১৯৬৬ সালে ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে সেই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ইন্দিরা গান্ধী যে বছর প্রধানমন্ত্রী হন, তার পরের বছরেই ফ্রান্সে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান ভেঙে পড়েছিল। সেখান থেকেই এক সংবাদপত্র রয়ে গিয়েছে বছরের পর বছর।
ফরাসি রিসোর্ট চামনিক্স-এ ক্যাফে রেস্তোরাঁ 'ল্যা কাবানা দু সিয়েরো' চালান টোমোথি মটটিন। তিনিই এই সংবাদপত্র খুঁজে পান। গার্ডিয়ান সহ অন্যান্য নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টোমোথি জানিয়েছেন, "এখন এই সংবাদপত্রটি শুকনো করার কাজ চলছে। তবে এটার কন্ডিশন অনেক ভালো। এতটাই যে এখনও স্পষ্ট পড়া যাবে। আমরা প্রতিবারই বন্ধুদের সঙ্গে গ্লেসিয়ারে ঘুরতে গিয়ে ভেঙে পড়া প্লেনের কিছু না কিছু খুঁজে পাই। অভিজ্ঞতা দিয়ে আমরা জানি ঠিক কোন জায়গায় এগুলো পাওয়া যায়। সাইজ অনুযায়ী গ্লেসিয়ারগুলো এগুলো বয়ে নিয়ে যায়।"
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, যোগাযোগের সমস্যায় এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িংয়ের ৭০৭ বিমান ভেঙে পড়ে ফ্রান্সে। ১৭৭ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছিল সেই দুর্ঘটনায়।
হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘার নামানুসারে সেই বিমান ভেঙে পরে বসনস গ্লেসিয়ারে। সেখান থেকে মটটিনের ক্যাফে পায়ে হেঁটে ৪৫ মিনিট। মটটিনের উদ্ধার করা যে সংবাদপত্রের মধ্যে রয়েছে ইকোনোমিক টাইমস, ন্যাশনাল হেরাল্ডের মত পত্রিকাও।
মটটিন নিজের ক্যাফেতে উদ্ধার করা বহু সংগ্রহ রেখে দিয়েছেন। তিনি জানালেন, এই সংবাদপত্র গুলো বরফে থাকার কারণেই অবিকৃত রয়ে গিয়েছে এতদিন পরেও।
সেই দুর্ঘটনা থেকে আরো অনেক কিছু পরবর্তীকালে উদ্ধার করা হয়েছে। ২০১২ সালে ভারতীয় সরকারের একটি ডিপ্লোম্যাটিক মেল খুঁজে পাওয়া গেছে। ঠিক এক বছর পরে একজন ফরাসি পর্বতারোহী একটি বক্স পান, যাঁর মধ্যে দুর্মূল্য রত্ন ছিল। বর্তমান বাজারে যাঁর মূল্য ১ লক্ষ ১৭ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৩০ হাজার গ্রেট ব্রিটেন পাউন্ড।
পরবর্তীকালে বেশ কিছু মৃতদেহ পাওয়া যায়। মনে করা হয় সেগুলো এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের অথবা ১৯৫০ সালে অন্য এক বিমান মালাবার প্রিন্সেসের।