ইরানের বিশিষ্ট পরমাণ বিজ্ঞানীর হত্যাকারীদের চরম শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন ওই দেশের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই। পরমাণু বিজ্ঞানী মহসিন ফাকরিজাদের হত্যায় ইজরায়েলের হাত রয়েছে বলে শনিবার দাবি করেন ইরানের সুপ্রিম লিডার। তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বহু আগে থেকেই বিজ্ঞানী হত্যার অভিযোগে কাঠগড়ায় ইজরায়েল। কিন্তু শুক্রবার মহসিনের হত্যার ঘটননা সামনে আসার পর থেকে মুখে কুলুপ এঁটেছে ইহুদি দেশ।
মহসিনের হত্যাকাণ্ডে নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। তবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আশ্বাস দিয়েছেন, হোয়াইট হাউসে বসেই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ফেরাবে আমেরিকা। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই চুক্তি প্রত্যাহার করেছিলেন। শনিবারই পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন নিমিৎজ বিমান মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছে।
একটি বিবৃতিতে খামেনেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরানের প্রথম কাজই হল যে বা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের চরম শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেছেন, মহসিন ছিলেন দেশের একজন প্রখ্যাত এবং বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ। প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানিও ইজরায়েলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন হত্যাকাণ্ডে মদত দেওয়ার অভিযোগে। সেইসঙ্গে এও জানিয়েছেন. মহসিনের মৃত্যর পরও পরমাণু গবেষণার কাজ বন্ধ করবে না ইরান।
আরও পড়ুন প্যারিসে বিস্ফোরণের ছক! বেলজিয়ামে ট্রায়ালের মুখে ইরানের কূটনীতিবিদ
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহসিন ফাকরিজাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন প্রজেক্টের নেতৃত্বে থাকা বিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমারের মতোই কোনও পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ম্যানহাটন প্রজেক্টের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আণবিক বোমা তৈরি করেছিল আমেরিকা। রৌহানি ইহুদি রাষ্ট্র ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমরা ইহুদিদের ফাঁদে পা দেব না। ইরান অনেক বুদ্ধিমান দেশ। ওরা অশান্তি পাকাতে চাইছে। কিন্তু শহিদ মহসিনের হত্যাকাণ্ডের পাল্টা জবাব সঠিক সময়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার তেহরানের অনতিদূরে একটি গ্রামের কাছে মহসিনের গাড়ির সামনে একটি কাঠবোঝাই ট্রাকে বিস্ফোরণ হয়। কাঠের মধ্যে বিস্ফোরক লুকানো ছিল বলে ইরানি টেলিভিশনের দাবি। বিস্ফোরণের জেরে গাড়িটি দাঁড়িয়ে যায়। তখনই পাঁচজন বন্দুকবাজ আচমকা এসে এলোপাথাড়ি গুলিতে গাড়িটিকে ঝাঁজরা করে দিয়ে চম্পট দেয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মহসিনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচাতে পারেননি। তাঁর দেহরক্ষীরাও আহত হন। গুলিতে ঝাঁজরা গাড়ি এবং রক্তে ভেসে যাওয়া সড়কের ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন