একটা মৃত্যু গোটা দেশের মানুষকে রাজপথে নামিয়ে এনেছিল। প্রতিবাদ-আন্দোলনে স্তব্ধ হয়েছিল বিশ্বের প্রাচীনতম গণতন্ত্র। যার রেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও প্রভাব পড়েছিল। আমেরিকার বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের কারণ ছিল কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু। সেই ঘটনায় মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত হল পুলিশ অফিসার ডেরেক শাওভিন। আদালতের রায়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এদিন মন্তব্য করেন, প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করা হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে। শাস্তি হোক দোষীর, এই কামনাই করলেন বাইডেন।
একটা মৃত্যু কীভাবে গোটা জাতিকে নাড়িয়ে দিতে পারে তার প্রকৃত উদাহরণ ছিল জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু। পুলিশ অফিসার শাওভিন রাস্তার উপর হাঁটু দিয়ে ৯ মিনিট গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করে। সেই মৃত্যু স্ফুলিঙ্গের মতো বিদ্রোহ ছড়িয়ে দেয় গোটা আমেরিকায়। তারপর দাবানলের রূপ নেয় বিক্ষোভ। বিনোদুনিয়া থেকে খেলার দুনিয়া, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। বাইডেন এদিন বলেছেন, মানুষের মৌলিক অধিকার হল বাঁচার অধিকার। সেই অধিকার খর্ব করতে পারবে না কেউ। এতদিনে বিচার পেল জর্জ ফ্লয়েডের আত্মা।
বাইডেন আরও বলেছেন, এই বিচার আমেরিকার ইতিহাসে একটা বড় পদক্ষেপ হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। মঙ্গলবার দুপুরে দেশের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে বড় ঘোষণা করার কথা ছিল প্রেসিডেন্টের। সেইমতো হোয়াইট হাউসে প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এদিন দুপুরে আদালতের রায় ঘোষণা চাক্ষুষ করার জন্য ওভাল অফিসে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে টিভির পর্দায় চোখ রাখেন বাইডেন। বাতিল হয় সমস্ত কর্মসূচি।
যেই আদালত রায় ঘোষণা করে সঙ্গে সঙ্গেই আধিকারিকরা বাইডেনের জন্য দ্রুত মঞ্চ তৈরি করেন। ক্রস হলে হ্যারিসকে পাশে নিয়ে বক্তব্য রাখেন বাইডেন। রায় ঘোষণা হওয়ার পর ফ্লয়েডের পরিজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সমবেদনা জানান প্রেসিডেন্ট। কমলা হ্যারিস বলেছেন, জাতিবিদ্বেষের প্রকৃত সত্য হল এটা। এটা কোনও কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের সমস্যা নয়, বরং সমস্ত আমেরিকানদের সমস্যা। এরা এটাই আমাদের দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে এতদিন।