ফের ক্ষতায় ডেমোক্র্যাটরা। উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা মার্কিন মুলুকে। তার মাঝেই প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম ভাষণে 'ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা' গঠনের কথা জানালেন জো বিডেন। বললেন, 'আমেরিকার নিরাময় ও পুনরুদ্ধারের সময় এসেছে।' বিশ্বের আঙিনায় আমেরিকাকে ফের সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে যে তিনি বদ্ধপরিকর এ দিনের ভাষণে তাও স্পষ্ট করেছেন বিডেন।
মার্কিন ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জেতার রেকর্ড গড়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন। ভাষণের শুরুতেই সেই প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন ভোটারদের কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। বলেছেন, 'এ দেশের মানুষ এক সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা এখ যোগে জয়ের বার্তা দিয়েছেন। সব চেয়ে বেশি ভোটে আমরা জিতেছি। এই জয় মানুষের দ্বারা সম্ভব হয়েছে। তাই এই জয় আমেরিকাবাসীর জয়।'
জয়ের যত কাছাকাছি এসেছেন বিডেন ততই আমেরিকার রাস্তায় ভিড় জমতে শুরু করেছে। উচ্ছ্বাস দেখিয়েছেন মানুষ। এতেই আপ্লুত বিডেন। তাঁর কথায়, 'এটা উন্মাদনা জয়ের বহিঃপ্রকাশ। ভবিষ্যতের শুভ সূচনার আশায় মানুষের আস্থা। আমি এই আশা-আস্থা পূরণের চেষ্টা করব।'
বিরোধী ট্রাম্প শিবিরের সমর্থকরা যে শত্রু নন, তা প্রথম ভাষণেই জানিয়ে দিয়েছেন ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভেদাভেদ কোনও মতেই সহ্য করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন জো বিডেন। দৃঢ় কণ্ঠে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ বলেছেন, 'ওরা (রিপাবলিকান) আমাদের শত্রি নয়, ওরা এ দেশেরই বাসিন্দা। তাই ভেদাভেদ বরদাস্ত করব না।' এরপরই ঐক্যের বার্তা দিয়ে তাঁর আহ্বান, 'যাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন তাঁদের দুঃখ আমি বুঝতে পারছি। এই পরিস্থিতিতে আমরা একে অপরকে আরেকটা সুযোগ দিয়ে দেখি। গরম গরম বক্তব্য পেশের বদলে উত্তেজনা প্রশমণের চেষ্টা করি। একে অপরকে বোঝার ও শোনার চেষ্টা করি।' তাঁর সমর্থকদের মত যাঁরা তাঁকে ভোট দেননি- তিনি তাঁদেরও প্রেসিডেন্ট বলে এ দিন প্রথম ভাষণেই স্মরণ করি দিয়েছেন বিডেন। জানিয়েছেন, 'ভেদাভেদ মুছে ঐক্যবদ্ধ আমেরিকা গড়ার চেষ্টা করব।'
বিডেনের সঙ্গেই একই মঞ্চে এ দিন ছিলেন প্রথম মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত কমলা হ্যারিস। বিডেন বলেন, 'ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসাবে আমাকে মনোনিত করার জন্য আফ্রিকান-আমেরিকানদের ধন্যবাদ।'
প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর প্রথম ও প্রধান কাজ কী হতে চলেছে তাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন জো বিডেন। বলেছেন, 'করোনা মহামারী মোকাবিলাই এখন আশশু কর্তব্য। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পরামর্শদাতা হিসাবে সোমবার আমি বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞের নাম ঘোষণা করব। অতিমারী রোধে আমি কোনও খামতি রাখতে রাজি নই।' এরপরই অতিমারী মোকাবিলায় ১২ সদস্যের একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছেন বিডেন। এই টাস্ক ফোর্সের অন্যতম নেতৃত্বদাতা সদস্য হয়েছেন সার্জেন জেনারেল বিবেক মূর্তি। উল্লেখ্য, করোনার থাবায় বিশ্বে সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ আমেরিকা।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রথম ভাষণে কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, 'এই দফতরে দায়িত্বে প্রথম কোনও মহিলা এলেন। আশা করি এটাই শেষ নয়।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন