scorecardresearch

বিক্ষোভ উধাও, আমেরিকার ‘ওয়ার ক্রিমিনাল’ পুতিনই এখন রাশিয়ার ‘জাতীয় নায়ক’

এখন রাশিয়াবাসীর কাছে পুতিন হিরো। যাঁরা কিছুদিন আগেও, ‘কেন যুদ্ধ’ বলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁরাই এখন পুতিনের ‘চিয়ার লিডার’।

putin_1
ক্রেমলিনের দফতরে রুশ প্রেসিডেন্ট।

রাশিয়া প্রথমে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর, গোটা বিশ্ব দেখেছিল মস্কোয় বিক্ষোভ উপচে পড়ছে। এমন পরিস্থিতি যে পুতিনের প্রশাসনকে বিক্ষোভ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে কি, গ্রেফতার করতে হচ্ছে নিজের দেশের লোকজনকেই। লাঠিচার্জ করতে হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের হঠাতে। কিন্তু, সময় যতই এগোচ্ছে, ততই দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ায় পুতিনের প্রতি জনসমর্থন ক্রমশ বাড়ছে। বহু রুশ নাগরিক ইউক্রেনের ওপর পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়ার হামলাকে সমর্থন করছেন।

সেই জনসমর্থন কিছুদিন আগেই বোঝা গিয়েছিল রাশিয়ার এক স্টেডিয়ামে। সেখানে ইউক্রেনে হামলার সমর্থক রুশ নাগরিকরা জড় হয়েছিলেন। পুতিনও এসেছিলেন স্টেডিয়ামে। গিজগিজ করা গোটা স্টেডিয়ামজুড়ে উঠেছিল ‘পুতিন পুতিন’ রব। যেন দেশের প্রেসিডেন্ট নন। স্টেডিয়ামে এসেছেন কোনও বিশ্ববরেণ্য শিল্পী। শুধু তাই নয়, যে ব্যক্তিরা হামলার বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁদের বাড়ির দরজায় কে বা কারা যেন কাগজ সাঁটিয়ে লিখে দিয়ে গেছে, ‘বিশ্বাসঘাতক’। যা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে, ভ্লাদিমির জেলেনস্কি যখন রুশ আক্রমণ ঠেকিয়ে বিশ্বের নায়ক হন না কেন, জাতীয়তাবাদের আবেগে সওয়ার পুতিনও। আর, সেই জাতীয়তাবাদের নৌকোয় চাপা রুশ প্রেসিডেন্ট এখন রাশিয়াবাসীর কাছে ‘যুদ্ধ অপরাধী’ নন, মহানায়ক।

ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর পাঁচ সপ্তাহ কেটে গেছে। ন্যাটো, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থা- অনেকেরই নানা নিষেধাজ্ঞার আওতায় এখন রাশিয়া। এই সময়ের মধ্যে রাশিয়ার সব গণমাধ্যম পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, যে সব সংবাদমাধ্যম রুশ প্রশাসনের বিরুদ্ধ সোচ্চার হওয়ার চেষ্টা করেছিল, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আবেদনে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলো রাশিয়ায় তাদের কার্যকলাপ বন্ধ করে দিয়েছে।

সেই সুযোগে পুতিন রাশিয়ার মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, তাঁদের হাতে বিকল্প ছিল না। কারণ, আমেরিকার মদতে ইউক্রেনে রাসায়নিক এবং জৈব অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল। যা রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োগের ষড়যন্ত্র করছিল জেলেনস্কির সরকার। শুধু তাই নয়, ডোনেত্স্কের মতো ইউক্রেনের রুশপন্থী নাগরিকদের এলাকার ওপর ব্যাপক হামলাও চালিয়েছে জেলেনস্কি প্রশাসন। তাতে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের বাঁচাতে পালটা হামলা ছাড়া উপায় ছিল না। সঙ্গে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকার ছায়াযুদ্ধের পটভূমিকেও তুলে ধরেছে পুতিন প্রশাসন। এই সবের দৌলতেই এখন রাশিয়াবাসীর কাছে পুতিন হিরো। যাঁরা কিছুদিন আগেও, ‘কেন যুদ্ধ’ বলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁরাই এখন পুতিনের ‘চিয়ার লিডার’।

Read story in English

Stay updated with the latest news headlines and all the latest World news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Many russians now rally behind putins invasion