ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতি উঠতেই আরও বেশি আক্রমণাত্মক রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ইউক্রেনে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ আবার শুরু হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ান সেনার আক্রমণে বেশ কয়েকটি শহর দখলে এসেছে। ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রুশ বাহিনী গুলি করে নামিয়েছে চারটি ইউক্রেনীয় Su-27 জেট।
চলছে প্রবল যুদ্ধ এর মধ্যে দক্ষিণ ইউক্রেনীয় শহর মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কো বলেছেন, শহরে পাঁচদিন ধরে জল, আলো নেই। বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত। শহরের এমন পরিস্থিতি যে মৃতদেহগুলিও উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। টানা ৬’দিন মারিউপোল শহরে জারী হয়েছে বিমানহানা। বোইচেঙ্কো বলেছেন যে পরিস্থিতি খুবই জটিল,রুশ সেনা লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে। প্রাণ হারাচ্ছে নিরপরাধ মানুষ। রেয়াত করা হচ্ছে না শিশুদেরও।
একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমাদের অনেক সামাজিক সমস্যা রয়েছে, যেগুলো সব রাশিয়ানরাই তৈরি করেছে।" সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী যথাসাধ্য প্রতিরোধ গরে তুলছে। ইতিমধ্যে আমরা রাশিয়ান সেনাদের একাধিক ট্যাঙ্কার, যুদ্ধবিমান, সামরিক অস্ত্র ধ্বংস করেছি। তিনি আরও বলেছেন,শহরে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের বাস। এতগুলো মানুষ টানা চারদিন অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে। পানীয় জলটুকুও পর্যন্ত নেই।
সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন। বেশ কিছুদিন শহরে মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না। রাশিয়ান সেনার হামলার পর থেকে রিজার্ভ জল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেছেন, রাশিয়ান সেনারা আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, চিকিৎসা সরবরাহ, এমনকি শিশুদের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিতে চায়। তাদের লক্ষ্য হল শহরকে শ্বাসরোধ করা এবং অসহনীয় চাপের মধ্যে রাখা।" বোইচেঙ্কো আরও বলেছেন যে গত কয়েক দিনে আহত এবং মৃতের সংখ্যা বেড়েছে, সংখ্যা হাজারে পৌঁছেছে আগামীদিনে পরিসংখ্যান আরও খারাপ হতে চলেছে।
একই সঙ্গে তিনি শহরের ডাক্তারদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, 'টানা ১০ দিন ডাক্তাররা রাত দিন এক করে সাধারণ মানুষের সেবা করে করেছে। হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে তার মাঝেও তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার'। তিনি জানান, 'আমাদের কাছে ৫০টির বেশি জ্বালানী ভর্তি বাস তৈরি ছিল শহর থেকে বেরোনোর জন্য। কিন্তু সেই সুযোগটুকু আমাদের দেওয়া হয়নি। প্রবল আক্রমণের মুখে আমাদের প্রায় ৩০টি বাস নষ্ট হয়েছে'। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন 'আলোচনার নামে প্রহসন চলছে। যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনের প্রশ্ন জড়িত সেখানেই আজ মানবতা বিপন্ন। শহরটি এক দম বন্ধ করে মেরে ফেলতে চাইছে রুশ সেনা' আক্ষেপ বোইচেঙ্কোর।