Advertisment

উপমহাদেশেও যুদ্ধের মেঘ! ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়া খোলামনে নিচ্ছে না, জানাল পাকিস্তান

৯ মার্চ দেশে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে ঘটনার নিন্দা করেছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
akash-missile new

'দুর্ঘটনাক্রমে ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানে চলে গিয়েছে।' ভারত থেকে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ার প্রেক্ষিতে এমনটাই জানিয়েছে নয়াদিল্লি। তার প্রেক্ষিতে এবার যৌথ তদন্তের আবদার জুড়ে বসল ইসলামাবাদ। একইসঙ্গে গোটা ব্যাপারটি আসলে এক, 'বড় ধরনের অপদার্থতা' বলেও কটাক্ষ করল। গত বৃহস্পতিবার বিস্ফোরকহীন এক ক্ষেপণাস্ত্র হরিয়ানার সিরসা থেকে আছড়ে পড়ে পাকিস্তানের খানেওয়াল জেলার মিয়াঁ চুন্নুর কাছে। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ১২৪ কিলোমিটার ভিতরে ওই ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ায় অবশ্য কোনও প্রাণহানি ঘটেনি। কিন্তু, ভারত এবং পাকিস্তানের তলানিতে ঠেকা সম্পর্কে ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ার ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

Advertisment

নয়াদিল্লি যাই বলুক, ঘটনাটি পাকিস্তানের কাছে কার্যত হুমকির মতোই ঠেকেছে। কারণ, ক্ষেপণাস্ত্র হানা মোটেও সাধারণ বিষয় নয়। এর নির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি আছে। বিভিন্নস্তরে অনুমতির পর ক্ষেপণাস্ত্রকে উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়। তারও লম্বা প্রক্রিয়া আছে। নয়াদিল্লি অবশ্য জানিয়েছে, ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সেসব মানতে নারাজ ইসলামাবাদ। তাদের বক্তব্য, যেহেতু পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্রটি আছড়ে পড়েছে, তাই ওই বিভাগীয় তদন্ত যথেষ্ট নয়।

এক প্রেস বিবৃতিতে পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, '৯ মার্চ ভারতের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়েছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য দফতর বিবৃতি দিয়ে ঘটনার নিন্দা করেছে। বিষয়টিকে কারিগরি ত্রুটি বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি, এক অন্তর্বর্তী তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে। গোটা বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এই ঘটনা বেশ কিছু মৌলিক এবং প্রোটোকলজনিত বিষয়কে তুলে ধরেছে। পরমাণুর পরিবেশে দুর্ঘটনাজনিত এবং অনুমতিহীন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ফলে নিরাপত্তা ভঙ্গ হয়েছে।' এই সব বিবৃতির পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যাতে এমন না-ঘটে, তার জন্য নয়াদিল্লি কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা-ও জানতে চেয়েছে ইসলামাবাদ।

যেখানে ক্ষেপণাস্ত্রটি আছড়ে পড়েছে, সেখান দিয়ে যাত্রীবাহী বিমান যাতায়াত করে। সেনিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের সঙ্গে পাকিস্তান বেশ কিছু তথ্য চেয়েছে নয়াদিল্লির থেকে। যার অন্যতম, ক্ষেপণাস্ত্রটি কি নিজে থেকেই ধ্বংস হয়? কীভাবে এটা পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়ল? রক্ষণাবেক্ষণ করার সময়ও কি ভারতে ক্ষেপণাস্ত্রকে উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়? ক্ষেপণাস্ত্রটি যেহেতু পাকিস্তানের মাটিতে আছড়ে পড়েছে, তাই ভারতের বিভাগীয় তদন্ত যথেষ্ট নয় বলেই জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

একইসঙ্গে ভারতকে হুমকির সুরেই ইসলামাবাদ জানিয়েছে, নয়াদিল্লির উত্তরের ভিত্তিতেই তারা পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে। পরমাণু শক্তিধর ভারত এবং পাকিস্তান। প্রয়োজনে আত্মরক্ষার স্বার্থে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য তৈরি হবে। এতে যে পরমাণু আবহে গোটা ভারতীয় উপমহাদেশের নিরাপত্তাজনিত স্থিতাবস্থা ভঙ্গ হতে পারে, সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদ।

আরও পড়ুন- পালানোর সময় দেখলাম সুমিতে ঢুকছে রাশিয়ার ট্যাংক, জানালেন ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা

এমনিতেই কাশ্মীর ইস্যুতে ফের উত্তাপের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে গিয়েছে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক। সংঘ পরিবারের একাংশ একদিকে যখন পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের জন্য নয়াদিল্লির কাছে দাবি তুলছে, সেই সময়ই শ্রীনগরে ভরা বাজারে গ্রেনেড হানায় ফের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনিতেই বর্তমান বিশ্ব, রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে রীতিমতো উত্তপ্ত। তার ওপর দীর্ঘদিনের শত্রু পাকিস্তানের কাশ্মীরে নতুন করে উসকানিমূলক ভূমিকার বিরুদ্ধেই যেন ভারতের ক্ষোভ প্রতীকী হয়ে আছড়ে পড়েছে পাকিস্তানের মাটিতে। এমনটা আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

Read story in English

Indian army Supersonic Missile
Advertisment