প্যালেস্তাইনের রামাল্লায় ভারতীয় দূতাবাস থেকে গত ৬ মার্চ, রবিবারই উদ্ধার হয়েছিল রাষ্ট্রদূত মুকুল আর্যের দেহ। কিন্তু, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ কাটেনি পরিবারের। সেই কারণে, ছেলের মৃত্যুতে উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে এবার দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন মুকুল আর্যের মা। এই মৃত্যুকাণ্ড এক সন্দেহজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে তিনি আদালতে অভিযোগ করেছেন। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস)-এর চিকিত্সকদের এক দলকে দিয়ে দেহের ময়নাতদন্তের আর্জিও প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতের মা জানিয়েছেন।
২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল আর্য। বছর ৩৭-এর এই আধিকারিক ২০২১ সাল থেকে প্যালেস্তাইনের রামাল্লায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ছিলেন। গত জানুয়ারিতে ভারতেও এসেছিলেন। ৩ মার্চ পরিবারের সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলেন। আচমকা, ৬ মার্চ জানা যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। প্যালেস্তাইনের চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে (মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন) আক্রান্ত হয়েই মুকুল আর্যের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, সেকথা মানতে নারাজ মুকুল আর্যের মা রোশনলাল আর্য। তাঁর দাবি, ছেলের হৃদযন্ত্রে কোনও সমস্যাই ছিল না। আর, সেই কারণেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তিনি আদালতের সাহায্য চান বলে, রোশনলাল আর্য দিল্লি হাইকোর্টে জানিয়েছেন।
দিল্লি আদালতে রোশনলাল আর্য জানিয়েছেন, ৩ তারিখের পর থেকে ছেলের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ হয়নি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। তারপরই ৬ মার্চ, ছেলের মৃত্যুর কথা জানতে পারেন। এনিয়ে কেন্দ্রের বিভিন্ন সংস্থার কাছে নানা অভিযোগও জানিয়েছে মুকুল আর্যের পরিবার। কিন্তু, কোনও সদুত্তর পায়নি বলেই প্রয়াত রাষ্ট্রদূতের মা আদালতে অভিযোগ করেছেন।
মৃত্যুর পর প্রায় একসপ্তাহ হতে চলল। এখনও প্রয়াত রাষ্ট্রদূতের দেহ ভারতে পৌঁছয়নি। এই সব কারণে, গোটা বিষয়টিতে একটা অদ্ভূত রহস্য তৈরি হয়েছে। সেই রহস্য উন্মোচনের জন্যই আরও পচে যাওয়ার আগে তাঁর ছেলের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত দরকার। আদালতে এমনই দাবি করেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রদূতের মা।
আরও পড়ুন- শূকরের হৃদপিণ্ড নিয়ে দু’মাসের বেশি বাঁচলেন না মার্কিন নাগরিক
প্যালস্তাইনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে মুখ খুলেছে বিদেশ মন্ত্রক। এই ব্যাপারে মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, 'রামাল্লায় নিযুক্ত প্রয়াত রাষ্ট্রদূত মুকুল আর্যের মৃত্যু নিয়ে আমরা কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য শুনেছি। স্বাভাবিক কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এক তরুণ কূটনীতিবিদের এই বেদনাদায়ক মৃত্যুর ঘটনাকে বিনম্রতা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখার জন্য আমরা আবেদন জানাচ্ছি।'
Read story in English