মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান। নির্বাচিত সরকারকে ফেলে আগামী এক বছরের জন্য দেশের দখল নিল সেনা। ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি-র নেত্রী আং সান সুকিকে গৃহবন্দি করল সেনাবাহিনী। মায়ানমারের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেল মিয়াওয়াদ্দি-তে এই ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের রাজধানী নে পি দ্য সহ দেশের বিভিন্ন শহরে ইন্টারনেট, টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। যান্ত্রিক গোলযোগের জেরে মায়ানমারের কোনও খবরই প্রকাশ্যে আসছে না।
Advertisment
দেশের সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে বিগত কয়েক মাস ধরেই টানাপড়েন চলছিল। গত নভেম্বরের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় সুকির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি। কিন্তু ভোটে জালিয়াতির অভিযোগ নিয়েই বিরোধ বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এদিন পরিস্থিতি বদলে যায়। দেশের দখল নেয় সেনা।
আপাতত গৃহবন্দি করা হলেও পরে আং সান সুকিকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে খবর। যদিও বর্তমানে দেশবাসীকে শান্ত থাকারই পরামর্শ দিয়েছেন সুকির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি-র মুখপাত্র।
মায়নমারে সেনার ক্ষমতা দখলের নিন্দায় মুখর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া। সেদেশের সেনাবাহিনীকে আইনের শাসন মেনে চলার আর্জি জানিয়েছে এই দুই দেশ। মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাইডেন প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান বিদেশমন্ত্রী মারিসে পেইনে সুকিকে মুক্তির দাবি জানিয়েছে। নভেম্বরের নির্বাচনের প্রেক্ষিতে মায়ানমারের ন্যাশনাল এসেম্বলির পুনর্গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মায়ানমারে গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আং সান সুকি দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় বন্দি ছিলেন। পরে ২০১৫ সালে ভোটে ব্যাপক জয় পেয়ে ক্ষমতা দখল করেন সুকি। পান নোবেল শান্তি পুরস্কার। কিন্তু ২০১৭ সালে রাখাইন প্রদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং গণহত্যার অভিযোগ ওঠে সুকি সরকারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মহলে ধাক্কা খায় সুকির ভাবমূর্তি। পরে গত বছর নভেম্বরে ভোটে কারচুপি ঘিরেও অভইযোগের তির ছিল এই নেত্রীর বিরুদ্ধে। মায়ানমারের নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগ নস্যাৎ করলেও সুকি সরকারের সঙ্গে এই নিয়েই সেনার বিরোধ চরমে ওঠে। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কা সত্ঠি করে মায়ানমারের ফের সেনা অভ্যুত্থান ঘটল।