পাকিস্তানের মসনদে ইমরান জমানার শেষের শুরু? ঘটনার গতিপ্রকৃতি যেন সেই দিকই নির্দেশ করছে। মঙ্গলবার রাতেই শাসকদ দল ইমরান খানের তেহরেক ই ইনসাফের হাত ছেড়ে বিরোধী শিবিরে নাম লিখিয়েছে মুত্তাহিদা কাওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম-পি)। বুধবার সকালে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন দুই মন্ত্রী। পাক সংসদে দুয়ারে অনাস্থা ভোট। তার আগে জোটসঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘিরে সংখ্য়াতত্ত্বের নিরিখে বিপাকে ইমরান সরকার। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে কুর্সি বাঁচাতে মরিয়া ইমরান খান। ড্যামেজ কন্ট্রোলে এ দিনই ক্যাবিনেট বৈঠকের ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ৩রা এপ্রিল পাক সংসদে ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ভোটাভুটি হবে। এমনটাই জানিয়েছেন পাক অব্যন্তরীন মন্ত্রী শেখ রশিদ। অর্থনৈতিক সংকট ও মুদ্রাস্ফিতীতে জর্জরিত পাকিস্তান। দৈনতা ক্রমশ বাড়ছে। এই অবস্থার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন তেহরি ই ইনসাফ সরকারকে দায়ী করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। গত ৮ই মার্চ পাক সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী জোট। যার প্রেক্ষিতে আগামী ৩রা এপ্রিল ভোটাভুটি হবে। ক্ষমতায় থাকতে হলে ওই ভোটে পাক সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন যে তাঁর দিকেই রয়েছে, তার প্রমাণ দিতে হবে ইমরান খানকে।
কিন্তু জোটসঙ্গীর ডিগবাজিতে আপাতত সংখ্য়াগরিষ্ঠ সাংসদের সমর্থন জোগাড় করাই মাথাব্যথা শাসক দলের সামনে। সংখ্যার বিচারে, ৩৪২ আসনের পাক সংসদে সরকারে থাকতে ইমরান খানের প্রয়োজন ১৭২ জন সাংসদের সমর্থন। এতদিন তেহরিক ই ইনসাফ সরকারের সঙ্গে ১৭৯ জন সাংসদের সমর্থন ছিল। কিন্তু এমকিউএম-পি শিবির বদল করায় ইমরান সরকারের শক্তি কমে দাঁড়াচ্ছে ১৬৪-তে। অন্যদিকে এমকিউএম-পি সাংসদের ভোট বিরোধীদের দিকে পড়লে পিপিপি নেতৃত্বাধীন জোটের আসন পৌঁছবে ১৭৭-এ। ফলে বিরাট অঘটন না ঘটলে ইমরান খানের ক্ষমতা হারানো কার্যত সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
এদিকে ইমরানের যে কুর্সি ছাড়া ছাড়া বিকল্প উপায় নেই সেকথা বুধবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা তথা পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাবল ভুট্টো। তাঁর চ্যালেঞ্জ, 'প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতেই হবে। আর ওঁর পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সম্ভব হলে কালই ভোটাভুটি হোক, যাতে আমরা কাজ এগিয়ে নিয়েযেতে পারি।'
সেদেশের সংবাদ মাধ্যমের খবর, বুধবার বিকেলে পাক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েছেন সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া ও পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান নাদিম আহমেদ আনজুম।
Read in English