কিম জং উনের আপন দেশে, আইন-কানুন সর্বনেশে। সুকুমার রায় শিব ঠাকুরের দেশের কথা বলেছিলেন কবিতায়। কিন্তু কে জানত উত্তর কোরিয়ায় এমন সর্বনেশে আইন-কানুন হবে! কোরিয়ায় শাসকের নয়া ফরমান, ১১ দিন দেশবাসী হাসতে, মদ খেতে, বাজার করতে পারবেন না। ১১ দিন ব্যাপী এই শোকপর্ব চলবে দেশে।
এমন সর্বনেশে কানুনের কারণ কী? জানা গিয়েছে, কিমের বাবা, কোরিয়ার আগের স্বৈরাচারী শাসক কিম জং ইলের দশম মৃত্যুবার্ষিকী হিসাবে ১১ দিন শোকপর্ব চলবে উত্তর কোরিয়ায়। রেডিও ফ্রি এশিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই শোকপর্ব চলাকালীন দেশের কেউ মদ্যপান, হাসাহাসি করা বা কোনও আরামদায়ক কাজকর্মে লিপ্ত থাকবে না।
আরও জানা গিয়েছে, এই সময়ে যদি কারও পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হয় তাঁরা জোরে কাঁদতে পারবেন না এবং দেহ সৎকার করার অনুমতি মিলবে শোকপর্ব শেষ হওয়ার পর। এক উত্তর কোরীয় রেডিও ফ্রি এশিয়াকে জানিয়েছেন, কেউ এই শোকপর্বের মধ্যে নিজের জন্মদিন পালন করতে পারবেন না। এমনটাই সরকারি ফরমান।
সূত্রের খবর, অতীতে শোকপর্ব চলাকালীন দেশবাসীকে মদ্যপান, নেশা করতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়েছে এবং আদর্শভ্রষ্ট অপরাধী হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। তাঁদের গুম করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন তালিবানি জুলুমে দেশছাড়া, রোনাল্ডোর দেশে সুরচর্চায় আফগান পড়ুয়া-শিল্পীরা
উল্লেখ্য, কিম জং ইল হলেন কিম স্বৈরতন্ত্রের দ্বিতীয় শাসক। ১৭ বছর দেশ শাসন করেছেন তিনি। গত ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, ইলের মৃত্যু দুদিন পর্যন্ত চেপে রেখেছিল দেশের সরকারি মিডিয়া। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার তিন মিনিট ধরে একটি সাইরেন বাজানো হয় দেশজুড়ে এবং এর পর উত্তর কোরীয়রা কিম জং ইলের শ্রদ্ধায় মাথা নত করে নীরবতা পালন করেন।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। অনেক মানুষ পিয়ংইয়ংয়ের মানসু পর্বতে উঠে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন প্রাক্তন শাসকের বিরাট মূর্তির সামনে। পাশাপাশি ইল এবং তাঁর বাবা ও উত্তর কোরিয়ায় প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সুংয়ের মূর্তি রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন