উত্তর কোরিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত ৮ মে উত্তর কোরিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। সে সময় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৬৮ এবং একজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যেই দেশটিতে দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে।
দেশটির অ্যান্টি-ভাইরাস সদর দফতর সূত্রের খবর এপ্রিলের শেষ থেকেই দেশে অজানা জ্বরের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে এবং জ্বরে এখনও পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৭ লক্ষ ছুঁইছুঁই। দেশের এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে কিম সরকার।
বিশেষজ্ঞরা এহেন পরিস্থিতির জন্য সেদেশের সরকার কেই দুষেছেন। সূত্রের খবর অনুসারে জানা গিয়েছে উত্তর কোরিয়াতে ২৬ লক্ষ মানুষ এখনও টিকার বাইরে রয়েছেন। সেই সঙ্গে টেস্টের সংখ্যাও অনেক কম। দেশের জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর অজানা জ্বরের কারণে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনার ঢেউ সামলাতে সেনাবাহিনীকে নামানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: পেট্রোল নেই, লাইন দেবেন না’, জনতাকে অনুরোধ এই দেশের প্রশাসনের
উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকা ও টিকার অসতর্কতার কারণে এখন পর্যন্ত দেশটিতে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। তাঁর কথায়, “সংক্রমণের ফলে উত্তর কোরিয়ায় বিরাট পরিবর্তন এসেছে। বিরাট ধাক্কা খেয়েছে দেশের অর্থনীতিও। এখনও পর্যন্ত এদেশে এটাই সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।”
KCNA-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যে রাজধানী পিয়ং ইয়ং-সহ প্রতিটি প্রদেশ, শহর, নগরে লকডাউন জারি করা হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে কল-কারখানা, অফিস-কাছারিও।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশজুড়ে জরুরি ভিত্তিতে কোয়ারেন্টাইন পরিষেবা চালু করা হয়েছে। সরকারের সাফাই, দেশের একটা বিরাট অংশের মানুষ করোনার টিকা নেননি। তাঁদের থেকেই নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আর তাই প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
উত্তর কোরিয়া করোনা মহামারির শুরু থেকেই কঠোর অবস্থান বজায় রেখেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর কোরিয়ার পরিস্থতি রীতিমত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এমন সময়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে বেশ বেগ পেতে হবে সেদেশের সরকারকে।
Read in English