ওমিক্রন দাপটে দিশেহারা সারা দেশ । বাড়তে শুরু করছে সংক্রমণের গ্রাফ। পশ্চিমবঙ্গও এই তালিকা থেকে বাদ নেই। এই রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতিও দিন প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। একেবারে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণের গ্রাফ। আর এর পিছনে যে ওমিক্রনের কারসাজি থাকতে পারে সেই আশঙ্কাই করছেন একদল বিশেষজ্ঞ। তবে এই সংক্রমণ বাড়ার নেপথ্যে ওমিক্রন আছে কিনা সেই নিয়ে জানতে গেলে আরও জিনোম সিকোয়েন্স দরকার। সেই টেস্ট এখানে তেমন সংখ্যায় হচ্ছে না।
ওমিক্রনের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই থাকছে মাঝারি উপসর্গ। এক্ষেত্রে মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল গড়ানো, শরীরে ব্যথা, মাঝেমাঝেই হাঁচি ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। আর এই সমস্ত লক্ষণই থাকে সাধারণ সর্দি-কাশি বা কমন কোল্ডে। আর এই লক্ষণ দেখেই একদল মানুষ হয়ে উঠেছেন অতি উৎসাহী। তাঁদের মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তেমন কোনও সমস্যা নেই।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিন্তু এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে একেবারেই প্রশ্রয় দিচ্ছে না। তাঁরা সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, এই ভাইরাস কিন্তু সাধারণ সর্দি-কাশি নয় তাই ওমিক্রনকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা: সৌম্যা স্বামীনাথন মতও এক্ষেত্রে একই। তিনিও টুইটারে জানান, ওমিক্রন কিন্তু কমন কোল্ড নয়। এক্ষেত্রে কিছুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর চাপ আসবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের আরও টেস্ট করতে হবে। রোগীদের নজরে রাখতে হবে। কারণ যে কোনও মুহূর্তে বাড়তে পারে রোগীর সংখ্যা।
তবে টিকা না নেওয়া মানুষজনদের বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে ওমিক্রন। এমনই সাবধানবানী এবার দিল, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, ‘ওমিক্রন আগের থেকে কম মারাত্মক বা যাদের টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁদের জন্য কম ক্ষতিকারক। তার মানে এই নয় যে, এটাকে কম বিপজ্জনক বলা হবে”। তিনি আরও জানান, টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন কিন্তু মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। তিনি সকলকে সতর্ক করে বলেছেন, ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট একটি "বিপজ্জনক ভাইরাস" বিশেষত যারা টিকা নেই তাদের জন্য। "যদিও ওমিক্রন ডেল্টার তুলনায় কম ক্ষতিকর।
তবে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অথবা কোমর্বিডিটি যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ওমিক্রন মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। তাই সকলকে নতুন টিকা বাজারে না আসা পর্যন্ত প্রচলিত টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ডব্লিউএইচও প্রধান এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, “আফ্রিকাতে ৮৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ এখনও একটি ডোজ ভ্যাকসিন পাননি। এই ব্যবধান বন্ধ না করা পর্যন্ত আমরা মহামারীর তীব্র পর্যায় শেষ করতে পারব না।”