কিয়েভ রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছেন অসংখ্য সাধারণ নাগরিক, হাতে তুলে নিলেন অস্ত্র। যুদ্ধের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও দেশকে বাঁচাতে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন ইউক্রেনের অসংখ্য সাধারণ মানুষ। তাদেরই মধ্যে একজন, বছর ৩৫ এর ‘টর্নেডো’। নিরাপত্তার কারণে তিনি তাঁর আসল নাম জানালে চাননি। তিনি জানিয়েছেন, ‘যুদ্ধের আগে তিনি একটি আসবাবপত্র বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যুদ্ধের কারণে সেই ব্যবসা আজ আর নেই’।
যখন প্রথম রাশিয়ান বোমাগুলি ইউক্রেনের রাজধানীকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তখন তিনি স্বেচ্ছায় টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স ফোর্সে যোগদান করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন ইউক্রেনে জন্য আমার লড়াই জারী থাকবে। আমি দাস হয়ে থাকতে চাইনা। স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই। তিনি বলেন "আমার স্ত্রী, আমার ছেলে এবং আমাদের প্রিয় পোষ্যকে বাঁচাতে আমি হাতে তুলে নিই মেশিনগান। রুশ আগ্রাসনের মুখে দাঁড়িয়ে এছাড়া আমার সামনে কোন রাস্তা ছিলনা’।
তার কথায়, ‘এখনও আমরা সামরিক বাহিনীর পোশাক পাইনি, সাধারণ পোশাকেই লড়াই চালাচ্ছি। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেই আমার মত অনেকেই স্বাধীন ইউক্রেনের জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি’।
আরো পড়ুন: ‘ইউক্রেন যেন এক স্বপ্নের দেশ’, স্মৃতি রোমন্থন করে বললেন আপ বিধায়ক
৪০ বছর বয়সী ওলেক্সান্ডার কোলট যুদ্ধ শুরুর আগে কাজ করতেই একটি আইটি সংস্থায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তার। তিনি বলেন, ‘ঘুম থেকেই উঠেই আমি ইউক্রেনের হয়ে লড়াইয়ে অংশ নিতে সামরিক বাহিনীর অফিসে যাই, কিন্তু অফিস বন্ধ ছিল। ফেরার পথে দেখতে পাই কিছু মানুষ রাস্তায় ব্যারিকেট করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আমি তাদের সঙ্গেই যোগ দিই। আমাদের সকলের একটাই লক্ষ্য ছিল রুশ বাহিনীকে কিয়েভে ঢুকতে না দেওয়া’।
তার কথায়, ‘ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সৈন্যদের মত, টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবকদের বেতন দেওয়া হয় না এবং তারা যে কোনও সময় পদত্যাগ করতে পারেন’। ‘কিয়েভের সবচেয়ে বিপজ্জনক উত্তর-পশ্চিম শহরতলিতে, যেখানে ভয়ঙ্কর লড়াই জারী রয়েছে, সেখানে সামনের সারিতে রয়েছে – সেনা, জাতীয় সুরক্ষা বাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী, টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক ব্যাটালিয়ন," আমি সেখানে থেকে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছি’ বলেছেন ৬২ বছর বয়সী ইউরি কুলাচেক, তিনি নিজে একজন এক্স মেজর। তিনি বলেন, তার সঙ্গে অবসর নেওয়া অনেকেই রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশকে বাঁচাতে স্বেচ্ছায় হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছেন।
Read story in English