করোনার সংক্রমণ পৌঁছে গিয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টেও। একের পর এক অভিযাত্রী করোনায় আক্রান্ত। অনেকে উপসর্গ লুকিয়েই শৃঙ্গজয়ের লক্ষ্যে চড়ছেন। কিন্তু হুঁশ নেই নেপাল সরকারের। সংক্রমণের কথা মানতেই চাইছে না সরকারি আধিকারিকরা। এমনটাই জানাচ্ছেন অভিযাত্রীদের গাইডরা।
অস্ট্রিয়ার পর্বতারোহী লুকাস ফুর্টেনবাচ গত সপ্তাহে একমাত্র অভিযাত্রী হিসাবে সংক্রমণের আতঙ্কে অভিযান স্থগিত করেছেন। শনিবার তিনি জানান, তাঁর সঙ্গে আসা বিদেশি গাইড এবং ছয়জন নেপালি শেরপা কোভিড পজিটিভ। কাঠমান্ডুতে সংবাদসংস্থা এপিকে তিনি জানান, উদ্ধারকারী কপ্টারের পাইলট, ইনসিওরেন্স এজেন্ট, বেস ক্যাম্পের ডাক্তার, অভিযাত্রীদের কাছ থেকে জানতে পারছি ভয়াবহ অবস্থার কথা। অনেকেই পজিটিভ এবং এর প্রমাণ রয়েছে।
তাঁর দাবি, বেস ক্যাম্পেই অন্তত ১০০ জন কোভিড পজিটিভ। সেটা ১৫০ থেকে ২০০-ও হতে পারে। বেস ক্যাম্পে উপসর্গ বোঝার অনেক গুলো কারণ রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, অনেকেই অসুস্থ, তাঁবুর ভিতরে কেউ কেউ কাশছে। চলতি মরশুমে ৪০৮ জন বিদেশি পর্বতারোহী এভারেস্টে চড়ার পারমিট পেয়েছে। তাঁদের দোসর কয়েকশো শেরপা এবং সাপোর্ট স্টাফ। তাঁরা এপ্রিল থেকেই বেস ক্যাম্পে রয়েছেন।
এদিকে, নেপালি পর্বতারোহণ আধিকারিকরা সক্রিয় কেসের ব্যাপারে অস্বীকার করেছেন। গত বছর যেহেতু এভারেস্ট অভিযান বন্ধ ছিল অতিমারীর কারণে, তার জন্য নেপালের অর্থনীতি ব্যাপক ধাক্কা খায়। এবছর পর্বতারোহণের অনুমতি দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে পার্বত্য দেশ। কিন্তু সংক্রমণের কথা মানতে নারাজ সরকার।
শনিবারও এ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাইনি নেপালি আধিকারিকরা। অন্য অভিযাত্রী দলগুলি তাঁদের মধ্যে কারও সংক্রমণ নিয়ে ঘোষণা করেনি কিছু। কিন্তু বেস ক্যাম্প থেকে ফেরার পর অনেকেরই টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। অস্ট্রিয়ার অভিযাত্রীর অভিযোগ, অনেক দলই নিজেদের সঙ্গে টেস্টিং কিট নিয়ে আসেনি। আর তাঁর দল অভিযান বাতিল করতেই দুজনের টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
গত এপ্রিলে নরওয়ের এক পর্বতারোহী প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন বেস ক্যাম্পে। তারপর তাঁকে কপ্টারে করে কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসার পর তিনি দেশে ফিরে যান। গত সপ্তাহে সংক্রমণের আতঙ্কে চিন তাদের দিক থেকে এভারেস্ট অভিযান বন্ধ করে দেয়। কিন্তু নেপাল, তাদের হুঁশ ফিরছে না!