দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার লক্ষণই নেই। লাগাতার গণবিক্ষোভ সামলাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। যা লঙ্ঘনের দায়ে পুলিশকে অন্তত ৬০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করতে হয়েছে। তবে, আশার আলো বলতে একটাই, বিক্ষোভ ছড়ানো রুখতে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে প্রশাসন।
গত কয়েকদিন ধরেই দ্বীপরাষ্ট্রে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মিলছে না। কারণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষমতা ছিল না শ্রীলঙ্কা সরকারের। এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কাবাসীর যাবতীয় ক্ষোভ আছড়ে পড়ে প্রশাসনের ওপর। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ শুরু করেন দ্বীপরাষ্ট্রবাসী। ঐতিহাসিক ইন্ডিপেন্ডেন্স স্কোয়ারের দিকে মিছিল করেন বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা। নেতৃত্বে ছিলেন সাজিথ প্রেমদাসা। কারফিউ লাগু করায় তিনি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান।
রবিবারও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বিরোধীরা। সেই প্রতিবাদে শামিল হল সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীরাও। এরপরই ধরপাকড় বাড়ায় প্রশাসন। রবিবারই পশ্চিম প্রদেশ থেকে অন্ততপক্ষে ৬৬৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
এর আগে দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা এই সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো হয় পুরোপুরি নতুবা আংশিক বন্ধ ছিল। তবে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো চালু হলেও বিক্ষোভ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ সামলাতে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ক্যান্ডি। সেখানকার জনপ্রতিনিধি সমগী জনা বালাওয়েগয়া পার্টির লক্ষ্মণ কিরিয়েল্লা জানিয়েছেন, বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ছাত্ররাও। পেরাডেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে শ্রীলঙ্কা সেনাকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয়েছে।
এর মধ্যেই বিমান সংস্থাগুলো শ্রীলঙ্কায় বিমান ওঠানামার সংখ্যা কমিয়েছে। সেই তালিকায় শামিল হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়াও। বিমান সংস্থাগুলোর বক্তব্য, চাহিদা কম। বর্তমানে গোটা শ্রীলঙ্কা আর্থিক সংকটে ভুগছে। এই পরিস্থিতিতে বিমানে চাপার বিলাসিতা দেখাতে চাইছেন না শ্রীলঙ্কার বেশিরভাগ মানুষই। তাই কমানো হয়েছে বিমান ওঠানামার সংখ্যা।
Read story in English