কখন ভোটিং, এখনও অনিশ্চিত পাকিস্তানে। সকাল থেকে পাকিস্তানবাসী চেয়ে আছেন ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোটাভুটির দিকে। কিন্তু, শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত ইমরান এখনও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। ভোটাভুটির সময়ও নিশ্চিত করেননি স্পিকার। সকাল থেকেই শুধু কখনও বলছেন, নমাজের পর ভোটাভুটি হবে। কখনও বলছেন, ইফতারের পর হবে। কিন্তু, সেটা যে কখন তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না স্পিকার। বিরোধীরা বলছেন, আদালতের নির্দেশে এখনই ভোটাভুটি হওয়া উচিত। কিন্তু, সরকারপক্ষ বলছে, সুপ্রিম কোর্ট কখনও পার্লামেন্টের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
পাকিস্তানের সংবিধানের ৬৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, পার্লামেন্টের কাজ কেবল স্পিকার আর ডেপুটি স্পিকারের এক্তিয়ারভুক্ত। সেই কাজে আদালত কখনও হস্তক্ষেপ করতে পারে না। স্পিকার চাইছেন আগে বিতর্ক হোক। কিন্তু, বিরোধীরা চাইছেন আদালতের নির্দেশমতো শুধু ভোটাভুটি হোক। বিতর্কের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। পালটা স্পিকার বলছেন, তিনি আদালতের নির্দেশ মেনে চলবেন। কিন্তু, কিছুতেই ভোটিংয়ের সময় স্থির করে দিচ্ছেন না।
তার মধ্যেই অবশ্য প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইমরান খান ইস্তফা দিতে পারেন। এমন জল্পনাও চলছে। ইমরান, ক্যাবিনেট মিটিংও ডেকেছেন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারপক্ষ কৌশল গ্রহণ করে ভোট এড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে। সেই কথা মাথায় রেখে তাঁরা আইনজীবীদের বিশেষ দলকে প্রস্তুত রেখেছেন বলেই বিরোধীরা জানিয়েছেন। যাতে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। বিরোধীরা বলছেন, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোটাভুটিতে না-গেলে ভুলতে হবে স্পিকার, ইমরান খান-সহ শাসক দলের নেতাদেরই। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না-মানার শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড-সহ মোট ৮ বছরের সাজা। সেসব থেকে বাঁচতে শনিবার সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনও জানিয়ে রেখেছে ইমরানের দল। ইমরানের হয়ে এই আবেদন করেছেন বাবর আওয়ান ও আজহার সিদ্দিকি। তাঁদের আবেদন, অধিবেশন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ডেপুটি স্পিকারের। আর এটা পার্লামেন্টের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না সুপ্রিম কোর্ট।
বিরোধীরা বলছেন, তাঁর সরকারের দুর্নীতি বেরিয়ে পড়বে বুঝতে পেরেই ভোটাভুটি এড়ানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি ও তাঁর মন্ত্রীরা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথাও বলেছেন। যাতে তাঁরা সরকার ছেড়ে চলে গেলে তাঁকে অথবা তাঁর কোনও মন্ত্রীকে জেলে যেতে না-হয়। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট মহলগুলো ইমরানকে তেমন কোনও আশ্বাস দিতে রাজি হয়নি। যার ফলে একটা 'ডিল' বা চুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছেন ইমরান। আর, সেইজন্যই সরকারপক্ষ ভোটাভুটি আটকে রেখেছে বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। শনিবার ভোটাভুটি না-হলে, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
Read story in English