সংবিধানকে লঙ্ঘন করে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব এড়িয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই অভিযোগে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে ইমরানের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি একদিন পিছল। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে ইমরানের অনাস্থা এড়ানোর সিদ্ধান্ত। এই অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা।
গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন ইমরান। সরকারের শরিকরাও যোগ দিয়েছে বিরোধীদের দলে। বিরোধী একসঙ্গে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। রবিবার ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হওয়ার কথা ছিল। তার পর হওয়ার কথা ছিল ভোটাভুটি। সেই মতো সকলেই ধরে নিয়েছিলেন, বড় অঘটন না-ঘটলে রবিবারই পতন ঘটবে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান সরকারের।
কিন্তু, বিরোধীদের রীতিমতো অবাক করে দিয়ে ইমরানের দলের জনপ্রতিনিধি তথা পাকিস্তানের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার অধিবেশন খারিজ করে দেন। কারণ, হিসেবে ডেপুটি স্পিকার জানান, এই ভোটাভুটি বিদেশি ষড়যন্ত্রের ফসল। শুধু তাই নয়, গোটা বিষয়টিই অসাংবিধানিক। শুধু এসব বলাই না। ইমরানের আবেদনের ভিত্তিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টই মুলতুবি করে দেন।
ইমরান যেন এভাবে নিজেকে বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি না-পারলে পাকিস্তানের দায়িত্ব আর কোনও জনপ্রতিনিধিই কাঁধে নিতে পারবেন না। এই আচরণ পাকিস্তানের সংবিধান বহির্ভূত। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে সাংবিধানিক সংকট। সেকথা মাথায় রেখে ইমরান খানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো। তারা পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। রবিবার আদালত বন্ধ ছিল।
সোমবার আদালত খুলতেই বিরোধীরা ইমরানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। ২২ কোটির দেশ পাকিস্তান দীর্ঘদিন সেনাশাসনে ছিল। বারবার সেখানে সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। কিন্তু, বর্তমানে পাকিস্তানের আর্থিক হাল অত্যন্ত খারাপ। এই পরিস্থিতিতে বিদ্রোহ করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীও করেনি। উলটে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান, রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চেয়েছেন। এই অবস্থায় পাকিস্তানের রাজনীতির জল আরও ঘোলা করে রাশিয়া অভিযোগ করেছে, আমেরিকার চাপেই সরতে হয়েছে ইমরানকে।
Read story in English