মঙ্গলবার গভীর রাতেই দ্বীপরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষে। প্রেসিডেন্টের তরফে জারি করা ২২৭৪/১০ নম্বরের এই বিজ্ঞপ্তিতে রাজাপক্ষে জরুরি অবস্থার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতাও প্রত্যাহার করেছেন। তবে, দেশবাসী তাঁর বিরুদ্ধে যতই বিক্ষোভ দেখাক না-কেন, রাজাপক্ষে পদত্যাগ করবেন না, এমনটাই জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
বুধবার রাজাপক্ষের তরফে সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী জনস্টন ফার্নান্দো বলেন, 'আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে ৬০ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে ভোট দিয়েছেন। আমরা সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছি, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের প্রশ্নই নেই। আমরা এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে শ্রীলঙ্কার মানুষকে উদ্ধার করব।'
রাজাপক্ষের দাবি, দ্বীপরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অশান্তির পিছনে রয়েছে সেদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনাওয়াস (জেভিপি)। এরকম প্রতারণার রাজনীতিকে মোটেও প্রশ্রয় দেওয়া উচিত না। এই কথা জানিয়ে রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কাবাসীর কাছে হিংসাশ্রয়ী বিক্ষোভ বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন।
গত ১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাজাপক্ষে। তার আগে থেকে শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতির জন্য দ্বীপরাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। প্রতিবাদ জানাতে রাজাপক্ষের ব্যক্তিগত বাড়ির সামনেও বহু মানুষ জড় হয়েছিলেন। তাঁরা প্রেসিডেন্ট পদ থেকে রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করেন। মঙ্গলবার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। শ্রীলঙ্কার শাসক দল তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের ৪০ জন জনপ্রতিনিধি শাসক দলের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে।
২২৫ সদস্যের শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্ট এই সমর্থন প্রত্যাহার রীতিমতো বিপাকে ফেলেছে রাজাপক্ষের সরকারকে। শুধু তাই নয়, শ্রীলঙ্কার বহু সরকারি আধিকারিকও চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের পদত্যাগ নীতিগত অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। পাশাপাশি, আর্থিক ঘাটতি-সহ নানা বিষয়ে শ্রীলঙ্কা সরকারকে বিপাকে ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতিমারির জেরে শ্রীলঙ্কায় এমনিতেই পর্যটন শিল্পের হাল বেহাল হয়ে পড়েছে। তার ওপর রাজনৈতিক সংঘাতের বাড়াবাড়ি এবং জরুরি অবস্থা জারি করার জেরে দ্বীপরাষ্ট্রের পর্যটন শিল্প কার্যত শিকেয় উঠেছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সেই অবস্থায় বিধ্বস্ত পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করা কঠিন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Read story in English