সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় থামল জীবন চাকা। প্রয়াত হলেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপ। ৭৩ বছরের দাম্পত্যে ইতি হল শুক্রবার। এদিন বাকিংহ্যাম প্যালেসের তরফে তাঁর জীবনাবসানের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রায় এক মাস হাসপাতালে কাটিয়ে সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। কিন্তু ৯৯ বছরেই থামল তাঁর জীবনরথ। এদিন সকালে তাঁর সাধের উইন্ডসর প্যালেসেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন 'চিরযুবক' ফিলিপ।
এদিন রাজপরিবারের তরফে একটি বিবিৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে রানি তাঁর প্রিয়তম স্বামী, প্রিন্স ফিলিপ, ডিউক অব এডিনবরার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করছেন। আজ সকালে উইন্ডসর প্যালেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ডিউক অফ এডিনবরার প্রতি শ্রদ্ধায় যুক্তরাজ্যের সর্বত্র ইউনিয়ন জ্যাক অর্ধনির্মিত রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর শেষকৃত্য নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি বাকিংহ্যামের তরফে।
যখন বেঁচে ছিলেন, তখনও প্রিন্স ফিলিপ চেয়েছিলেন, তাঁর শেষকৃত্যে যেন কোনও আড়ম্বর না করা হয়। ওয়েস্ট মিনস্টার হলেও সমাধিস্থ হতে চাননি তিনি। তাই ফ্রগমোর কটেজের বাগানে তাঁকে সমাধিস্থ করা হতে পারে বলে রাজ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
রানির সঙ্গে তাঁর প্রেম বিশ্ববন্দিত। রানির স্বামী হলেও ব্রিটেনের মানুষের কাছে দ্বিতীয় এলিজাবেথের পরই ছিলেন তিনি। দীর্ঘ ৭৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে কখনও প্রেম কমেনি তাঁদের মধ্যে। রানির সবচেয়ে কাছের মানুষ, আস্থার জায়গা ছিলেন ফিলিপ। তাঁকে জীবনসঙ্গী হিসাবে পেতে রাজ পরিবারের রক্ষণশীলতা ভাঙতেও পিছপা হননি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
নৌসেনার কর্মরত ফিলিপের প্রতি প্রেম জন্মায় কৈশোরেই। কিন্তু জার্মানির অভিজাত মহলে ওঠাবসা ছিল ফিলিপের পরিবারের। সেকথা বিলক্ষণ জানত ব্রিটেনের রাজপরিবার। জার্মানিই দুটি বিশ্বযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ব্রিটেনের। তাই ফিলিপের সঙ্গে এলিজাবেথের বিয়েতে নারাজ ছিল রাজ পরিবার। কিন্তু সব বাধা-বিপত্তি সরিয়ে ফিলিপের ১৯৪৭ সালে ২১ বছরের দ্বিতীয় এলিজাবেথ বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। জীবন সায়াহ্নে এসে স্বামীর মৃত্যুতে একলা হয়ে গেলেন ব্রিটেনের রানি।