পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। যখন তখন ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। তার আগে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যুদ্ধে যাওয়া উচিত কি না তা মন্ত্রীদের কাছ থেকে মতামত নেন। তার পর বৈঠক শেষে দেশবাসীর উদ্দেশে জ্বালাময়ী, আবেগপূর্ণ ভাষণ দেন পুতিন। সেই ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের দুটি রুশ সমর্থিত অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করেন তিনি।
নিজের ভাষণ পুতিন সাফ জানিয়ে দেন, ইউক্রেন গোটাটাই রাশিয়ার দান। কিন্তু পরিস্থিতি এখন যা তাতে ইউক্রেনকে চরম সবক শেখাতে চান তিনি। তাই প্রথমেই দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করে ইউক্রেনকে বার্তা দিলেন পুতিন। সেই সঙ্গে ইউক্রেন সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন, পূর্ব ইউরোপে রক্তপাত জারি থাকবে।
পুতিনের জাতির উদ্দেশে ভাষণের পর হাত গুটিয়ে বসে নেই হোয়াইট হাউসও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়ার স্বীকৃতি স্বাধীন দুটি অঞ্চলে অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ চাপাচ্ছে ওয়াশিংটন। তবে এখনই রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা না চাপিয়ে পুতিনকে বার্তা দিয়ে রাখছেন বাইডেন। বাইডেনের সুরে সুর মিলিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও পুতিনের সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা করেছে, এবং জানিয়েছে, আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপাবে তারাও।
আরও পড়ুন যুদ্ধের পথে হাঁটবেন কি না, সেই ব্যাপারে মন্ত্রীদের মতামত নিলেন পুতিন
পুতিনের ভাষণের পরই সরকারি চ্যানেলে দেখানো হয়, প্রেসিডেন্ট ক্রেমলিনে দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে প্রজাতন্ত্র স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণাপত্রে সই করছেন। ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনে গৃহযুদ্ধের পর রুশ সমর্থিত এই দুই এলাকা ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পুতিন আরও একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন, যাতে ইউক্রেন সীমান্তে এই দুই অঞ্চলে রুশ সেনা মোতায়েন করে ইউক্রেন ভূখণ্ডে সেনা প্রবেশ করানোর সম্ভাবনা তৈরি করা যায়।
আরও পড়ুন যখন তখন আছড়ে পড়বে ক্ষেপণাস্ত্র! ‘বিশ্বযুদ্ধ’ শুরুর আগে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের
পুতিন এদিন ভাষণে বলেন, "কিয়েভে যাঁরা ক্ষমতার অলিন্দে বসে রয়েছে, তাঁদের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে সেনা শক্তিপ্রদর্শন বন্ধ করা হোক।" ঘণ্টাখানেকের বক্তব্যে পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, "যদি তা না করা হয় তাহলে রক্তপাতের দায় পুরোপুরি বর্তাবে কিয়েভের উপর। ইউক্রেন সরকার সম্পূর্ণ ভাবে যুদ্ধের জন্য দায়ী থাকবে।"