ইউক্রেনে হামলা নিয়ে সংবাদ সম্প্রচারের জেরে ঝাঁপ বন্ধ করতে বাধ্য হল এক রুশ সংবাদমাধ্যম। এটাই পুতিন সরকারের সাম্প্রতিকতম নিষেধাজ্ঞা। এর আগে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম থেকে হামলা, যুদ্ধ-র মতো বিভিন্ন শব্দ গত কয়েকদিন আগে পুরোপুরি উঠে গেছে।
টুইটার, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মও রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার বন্ধ হল 'ইকো মস্কভি' বা মস্কোর প্রতিধ্বনি নামে ওই রেডিও স্টেশন। সোভিয়েত পরবর্তী অধ্যায়ে তৈরি হওয়া এই সংবাদমাধ্যম মস্কোর স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এবার তাদের এই স্বাধীনতা এবং একইসঙ্গে চলার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল ইউক্রেন নিয়ে সংবাদ সম্প্রচারের জেরে।
এর আগেই রুশ সংবাদমাধ্যমকে কেবলমাত্র মস্কোর সদর দফতর ক্রেমলিনের আধিকারিকদের দেওয়া তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও 'ইকো মস্কভি'র যা হাল হল, তা দেখে রীতিমতো শঙ্কিত রাশিয়ার অন্য সংবাদমাধ্যমগুলো। কবে, তাদেরও ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যায়, এখন তারা সেই শঙ্কায় ভুগছে।
এরমধ্যে পুতিন সরকারের কোপে সবচেয়ে আগে পড়তে পারে ' নোভায়া গাজেটা'র মতো স্বাধীনচেতা সংবাদমাধ্যম। নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী দিমিত্রি মুরাটভ পরিচালিত এই পত্রিকা রুশ এবং ইউক্রেনিয়ান দুই ভাষাতেই প্রকাশিত হয়। যেখানে তারা প্রথম পাতার শিরোনাম, 'রাশিয়া ইউক্রেনে বম্বিং করছে' ঠেলে দিয়েছিল দেশের পাতায়।
পুতিন সরকারের এই সব বিধিনিষেধের জেরে এখন ইউক্রেন যুদ্ধের খবর যেভাবে রাশিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে, তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে ঠিক কী ঘটছে ইউক্রেনে। গত সপ্তাহে রাশিয়ান টেলিভিশনের দর্শকরা যেমন ভেবেছিলেন তাঁদের দেশ দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনে কোনও ছোটখাটো সংঘর্ষে জড়িয়েছে। যে ছোটখাটো সংঘর্ষকেই এক বিরাট যুদ্ধ বলে দেখানোর চেষ্টা করছে ইউক্রেন সরকার।
আরও পড়ুন- রুশপন্থী ইয়ানুকোভিচকে ফের ইউক্রেনের গদিতে বসাতে পারেন পুতিন
পুতিনের এইভাবে সংবাদমাধ্যমের পায়ে বেড়ি পরানোর কারণ, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া যখন ইউক্রেনে হামলা শুরু করেছিল, তখনই যুদ্ধের প্রতিবাদে মস্কোর পথে নেমেছিলেন অসংখ্য মানুষ। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছিল, মস্কো পুলিশ বিক্ষোভকারীদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। ধৃতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল বলেই সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রে জানা যায়।
ক্রেমলিনের জেলবন্দি সমালোচক অ্যালেক্সেই নাভালনি সেই সময় রাশিয়ার বাসিন্দাদের প্রতিদিন বিক্ষোভ দেখানোর আহ্বান জানান। তিনি পুতিনকে, 'স্পষ্টত উন্মাদ জার' বলেও কটাক্ষ করেন। তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে নাভালনি বলেছিলেন, 'আমরা আর একদিনও অপেক্ষা করতে পারব না। রাশিয়া, বেলারুশ অথবা গ্রহের অপর প্রান্ত, যে যেখানেই থাকুন না- কেন। প্রতি সপ্তাহান্তে সন্ধে ৭টা এবং কর্মদিবসে দুপুর ২টোয় আপনার শহরের প্রধান চৌরাস্তায় বিক্ষোভ দেখান।'
Read story in English