দীর্ঘ ৬০ বছর পর কাস্ত্রো যুগের অবসান। কিউবার শাসনভার ছাড়লেন রাউল কাস্ত্রো। দ্বীপরাষ্ট্রে এবার নতুন প্রজন্মের হাতে কমিউনিস্ট পার্টির দায়িত্বভার তুলে দিতে চান কিংবদন্তী জননেতা ফিদেলের ভাই রাউল। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মতাদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নবীন প্রজন্মের উপরই দায়িত্ব ন্যস্ত করছেন রাউল। ২০১৬ সালেই কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন রাউল। প্রেসিডেন্টের থেকেও কিউবায় সবচেয়ে ক্ষমতাবান পদ হল সাধারণ সম্পাদকের।
আগামী জুনে ৯০ বছর পূর্ণ হবে রাউলের। তার আগে শুক্রবার পার্টির কংগ্রেসে ক্ষমতা ছাড়ার কথা বলেন রাউল। সোমবার কংগ্রেস সম্মেলন শেষ হওয়ার পরই আনুষ্ঠানিক ভাবে শাসনভার ত্যাগ করবেন তিনি। কিউবার প্রেসিডেন্ট পদে দুবার তিনি দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। সেই পদে স্থলাভিষিক্ত হয় মিগুয়েল ডিয়াজ-কানেল বারমুডেজের। এবার পার্টির সাধারণ সম্পাদকও হচ্ছেন তিনি। এর আগে একমাত্র ফিদেল কাস্ত্রো দীর্ঘ তিরিশ বছর একসঙ্গে দুই শীর্ষ পদে ছিলেন।
তবে মিগুয়েলকে তিনিই বেছে নিয়েছিলেন। পার্টি কংগ্রেস দেশের শাসনতন্ত্র এবং নেতৃত্বে বেশ কিছু পরিবর্তনের কথা বলেন রাউল। চিরাচরিত রীতির বাইরে গিয়ে আরও উদার বাজার নীতি এবং দেশের অর্থনীতি দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে সংস্কারের কথা বলেন তিনি। ১৯৫৯ সালে বহু সংগ্রাম-বিপ্লবের পর ফিদেল এবং তাঁর ভাই ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু নয়ের দশক থেকে দেশের অর্থনীতি বেহাল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্ব রাজনীতিতে সঙ্গীহীন হয়ে পড়ে কিউবা। তাই নবীন প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের হাতে দেশের শাসনভার ন্যস্ত করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চান রাউল।
পাঁচ বছর আগে ফিদেলের মৃত্যুর পর বিপ্লবের আঁচ স্তিমিত কিউবায়। দীর্ঘদিন পর পোপ ফ্রান্সিসের পৌরহিত্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই সমাপ্ত হয়েছে। কিউবার উপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওবামা। ফিদেলের থেকে সামান্য নমনীয় রাউল কিউবাকে কমিউনিস্ট মডেল থেকে বের করে উদারনীতির পথে চালিত করতে চেয়েছিলেন। যাতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন হয়। কিউবার জনগণের সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার লক্ষ্যে একাধিক সংস্কার করেন তিনি।