রাশিয়া হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষ। এর মধ্যে শুধু ইউক্রেনের বাসিন্দার সংখ্যাই ৫ লক্ষ ২০ হাজার। বাকিরা ভারত, নাইজেরিয়া এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশের বাসিন্দা। এঁরা হয় কর্মসূত্রে অথবা লেখাপড়া করতে ইউক্রেনে এসেছিলেন। যুদ্ধের আগে নানা কারণে ইউক্রেন ছাড়তে পারেননি। বর্তমানে এই সব লোকজন পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন সীমান্তে অপেক্ষা করছেন নিজেদের দেশে ফেরার জন্য। অনেকে আবার প্রবল বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণের মুখে পালাতে পারেননি। আটকে গিয়েছেন মৃত্যুপুরী কিয়েভ বা তেমনই কোথাও।
যতই সময় এগোচ্ছে, ইউক্রেন সীমান্তে পূর্ব ইউরোপের এই দেশ ছাড়তে চাওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এখনও সীমান্তে গাড়ি এবং বাসের লম্বা লাইন। ওই সব গাড়ি এবং বাস যাত্রীবোঝাই। পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ মলডোভা। ইউক্রেনের এই সব সীমান্তই এখন ভিড়ে ভিড়াক্কার। মালপত্র টানতে টানতে হেঁটে সীমান্ত পেরোচ্ছেন, এমন লোকের সংখ্যাও নেহাত কম না।
সীমান্তের বেরেগসুরানি গ্রামে অস্থায়ী অভ্যর্থনা কেন্দ্র তৈরি করেছে হাঙ্গেরি। সেখানও বহু মানুষ অপেক্ষা করছেন গাড়ি ধরার জন্য। এই সব উদ্বাস্তুদের জন্য আপাতত অস্থায়ী ত্রাণশিবির তৈরি করেছে হাঙ্গেরি। সেখানে যাওয়ার জন্যই গাড়ি ধরতে চান উদ্ধাস্তুরা। ওই সব ত্রাণশিবির থেকে তাঁদের হাঙ্গেরি অথবা ইউরোপের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে হাঙ্গেরি সরকার। এই ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতামত নিয়ে রেখেছে হাঙ্গেরি প্রশাসন।
আরও খবর, রাশিয়া-ব্রিটেনের তুমুল চাপানউতোর, ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বযুদ্ধে গড়ানোর আশঙ্কা বাড়ল
এই উদ্বাস্তুদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন বছর ২৪-এর মারিয়া পাভলুসকো। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে জাইটোমিয়ারের এক তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পের ম্যানেজার মারিয়া। জানালেন, তিনি ছুটি কাটাতে কার্পাথিয়ান পর্বতে গিয়েছিলেন। তখনই বাড়ি থেকে ফোন আসে, রাশিয়া আক্রমণ করেছে। তাঁর ঠাকুমা ফোনে জানান, শহরে যুদ্ধ চলছে। পাভলুস্কোর মা পোল্যান্ডে থাকেন। সেই কারণে, হাঙ্গেরি থেকে তিনি পোল্যান্ড যাওয়ার কথা ভাবছেন। তাঁর মতোই গাড়ি ধরার লাইনে দাঁড়ানো বাকিরাও এভাবেই ঠিক করে নিয়েছেন, আপাতত নিজের মাথা গোঁজার ঠিকানা।
Read story in English