Advertisment

বাংলাদেশে ফের একাধিক মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার ১১

ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী নিজের খরচে মূর্তি এবং দোকানগুলি পুনর্নির্মাণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি

ধর্মীয় গোড়ামির বিষয়টি যেন ফুলে ফেঁপে উঠছে প্রতিনিয়তই। নানান দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়দের উপর ধর্মীয় পরিসরে আঘাতের চিহ্ন সর্বত্রই বিদ্যমান। বাংলাদেশের খুলনা জেলার হিন্দু মন্দিরে ইসলামিক সম্প্রদায়ের আক্রমণ যেন পাকিস্তানের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

Advertisment

বাংলাদেশের খুলনা জেলায় কমপক্ষে চারটি মন্দির, কিছু দোকান এবং সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়। ঘটনা ক্রমশ জটিল হতে থাকায় পুলিশি হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। পুলিশকে সাহায্য করতে ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে ডাকা হয়।খুলনা জেলা পুলিশ প্রধান মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বাংলাদেশে নানান সময় মৌলবাদী গোষ্ঠীরা হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালিয়েই থাকে। বিশেষত ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় মন্দিরগুলির উপর নানান সময় তাদের হামলা চিরাচরিত ঘটনা। পুলিশ প্রধান জানান, ভারতের সীমান্তবর্তী রূপসা উপ-জেলার শিয়ালী গ্রামে ঘটনাস্থলে নজরদারি চালানোর জন্য ব়্যাব কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতার হাত মিলিয়েছে।

সূত্র অনুযায়ী, অঞ্চলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মহামারীর থেকে বাঁচার জন্য ভগবানের আশীর্বাদের উদ্দেশ্যে নামগান করতে যাওয়ার সময় থেকেই গোলযোগ বাধে। তারা মসজিদের পাশ দিয়ে যে সময় যাচ্ছিলেন, সেই সময় নমাজ পাঠ হচ্ছিল। নমাজ পড়াকালীন এই ঘটনার কারণে তাদের অসুবিধের সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে তারা চারটি হিন্দু মন্দিরের দেবতাদের মূর্তি ধ্বংস করে বলে অভিযোগ। সঙ্গে কিছু হিন্দু পরিবারের দোকানেও আক্রমণ করেন। আক্রান্তদের কথায়, দুর্বৃত্তরা প্রথমে শিয়ালী মহাশ্মশান মন্দিরে হামলা করে এবং তারপর মন্দির ও শ্মশানে প্রতিমা ভাঙচুর করে। সেখান থেকে, তারা শিয়ালী পূর্বপাড়া এলাকায় আক্রমণ চালায় যেখানে তারা হরি মন্দির, দুর্গা মন্দির এবং গোবিন্দ মন্দিরে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙচুর করে।

স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ছয়টি দোকান ও দুটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। রূপসা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল সেন জানান, হামলার সময় চারটি মন্দিরে অন্তত ১০টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী জানান, এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একটি ধর্মীয় পুনর্মিলনী সভা আয়োজন করা হয়েছিল যাতে এলাকার ছয়টি গ্রামের বাসিন্দারা যোগ দিয়েছিলেন। সবাই শান্তি বজায় রাখার এবং বন্ধুত্ব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। মুর্শেদী ব্যক্তিগতভাবে সভায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি নিজের খরচে মূর্তি এবং দোকানগুলি পুনর্নির্মাণ করবেন। এবং সরকার পক্ষ থেকেও মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন পাকিস্তানে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরের পুনর্গঠনের পর ফেরানো হল হিন্দুদের

বাংলাদেশের হিন্দু-বুদ্ধ-খ্রিস্টীয় ইউনিটি কাউন্সিলের প্রধান সদস্য এই ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে নিন্দা করেন। তিনি বলেন, সময়মতো পুলিশি হস্তক্ষেপ এই ধরনের ঘটনা থেকে রেহাই দিতে পারে। ধর্মীয় বিষয়ে এই ধরনের ঘটনা যেন দেশের এক অপমান এবং তার সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রাতেও এর প্রভাব ভীষণ মাত্রায় আঘাত ফেলে। প্রতিনিধি দল এবং হিন্দু নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করাকালীন এলাকার হিন্দু বাসিন্দারা হামলার প্রতিবাদ করে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Bangladesh Hindu Temple World News
Advertisment