ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা র-এর প্রধান সমন্ত কুমার গোয়েলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জেরে নিজের দেশেই বিবাদে জড়ালেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন তিন প্রধানমন্ত্রী ওলির এই সাক্ষাৎ নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুশ্পকমল দাহাল প্রচণ্ড এই সাক্ষাৎকে অবৈধ এবং আপত্তিকর বলে দাবি করেছেন। তিনি আবার নেপালের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যানও। দুই প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী ভীমবাহাদুর রাওয়াল এবং নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ এই বিষয়ে গোপনে বেশ কিছু বৈঠকের পর ওলির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপ দেগেছেন। বুধবার মধ্যরাতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে র-এর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ওলি, এমন দাবি জানিয়ে সেই বৈঠকের যাবতীয় তথ্য চেয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, গোয়েল এবং তাঁর বিশেষ টিম কাঠমান্ডুতে বিশেষ বিমানে করে আসেন। এও জানা গিয়েছে, নেপালের বিরোধী দলনেতা শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গেও দেখা করেছে র-এর আধিকারিকরা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই এবং মাদেশের নেতা মহন্ত ঠাকুরের সঙ্গেও দেখা করেছেন র-এর আধিকারিকরা। গুঞ্জন এমন যে, ২৪ ঘণ্টা নেপালে ছিলেন র-এর প্রধান। নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির জন্য এই বিশেষ সফর বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ভারতীয় সেনাপ্রধান নারাভানের সফরের আগে র-এর প্রধানের এই সফর নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে নেপালের রাজনৈতিক মহলে। সীমান্ত বিবাদ নিয়ে যখন দুই দেশ সম্পর্কের বরফ গলানোর চেষ্টা করছে সেই সময় ওলির সঙ্গে গোয়েলের বৈঠক নিয়ে অশনি সঙ্কেত দেখছে প্রচণ্ডরা।
সূত্রের খবর, ওলির ভুল পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত কমিউনিস্ট পার্টি। তীব্র ওলি বিরোধী প্রচণ্ড তাঁর অনুগামীদের নির্দেশ দিয়েছেন, ওলির ভুলের জন্য যেন দলের একতা নষ্ট না হয়। তিনি বলেছেন, "দল এবং সরকারকে অন্ধকারে রেখে এই বৈঠকের অর্থ কী তার জবাব চাওয়া হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে।" দলের দুই শীর্ষ নেতা ঝালানাথ খানাল এবং মাধব কুমার নেপাল এই বৈঠককে দেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী আখ্যা দিয়েছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উপদেষ্টা সূর্য থাপা গোয়েলের সঙ্গে ওলির বৈঠককে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার হিসাবে অভিহিত করেছেন। জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের সমস্যা সমাধান এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্যই কথাবার্তা হয়েছে দুজনের।